Image description
 

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার আনাইতারা ইউনিয়নের ফতেপুর ময়নাল হক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক এটিএম আবদুল মতিন একবছর ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও বেতন তোলেন নিয়মিত। অজ্ঞাত স্থান থেকে বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর করেন বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।

 

বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের প্রথম দিকে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে স্থানীয় লোকজন ও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মতিনের বিরুদ্ধে। আন্দোলনের মুখে তিনি কয়েক মাস বিদ্যালয়ে যেতে পারেননি। একই বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আবার একই ইস্যুতে আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনের মুখে তার বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। তারপর থেকে একবছর পার হলেও তিনি বিদ্যালয়ের অনুপস্থিত রয়েছেন। একবছর ধরে ওই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও বেতন তোলেন নিয়মিত। বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তিনি স্বাক্ষর করেন অজ্ঞাত স্থান থেকে। তাঁর বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত কিনা বলতে পারেনি কেউ।

 

বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এখতেরুজ্জামান বলেন, যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রধান শিক্ষাক একবছর ধরে বিদ্যালয়ে আসেন না। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মির্জাপুরের কোন এক স্থানে নিয়ে গেলে তিনি স্বাক্ষর করে দেন।

 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এটিএম আবদুল মতিনের কাছে এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তার মুঠোফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

 

বিদ্যালয়ের পরিচালনার এডহক কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার অনেক আগে থেকেই প্রধান শিক্ষক আবদুল মতিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম আরিফুল ইসলামের পরামর্শে তাকে নোটিশ করা হয়। তারপর তিনি বিদ্যালয়ে এসে হাজিরা খাতায় বকেয়া সব স্বাক্ষর করেন। তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে তারপর থেকে তিনি আর বিদ্যালয়ে আসেনি। আমরা তাকে আবার নোটিশ দেওয়ার চিন্তা করছি।

 

এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জুলফিকার হায়দার জানান, ওই প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে আসার জন্য পরিচালনা কমিটি নোটিশ করে। তারপর একদিন এসে হাজিরা খাতায় সকল মাসের স্বাক্ষর করে চলে যান। তার বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির কারণ ৫ আগস্ট সংক্রান্ত নয়। তার আগে থেকেই যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে বিদ্যালয়ে তিনি অনুপস্থিত থেকেছেন।