
টাঙ্গাইলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন মারা গেছেন।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকালে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার দেওলী এলাকায় তার নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য শেষ করে এলাসিনে অপর একটি প্রচারণায় যোগ দিতে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।
গাড়িতে হার্টঅ্যাটাক করলে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে নিলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মেডিসিন বিভাগে দায়িত্বে থাকা ডা. মাহমুদুল আলম বলেন, রাত সাড়ে ৭টার দিকে হামিদুল হক মোহনকে নিয়ে এলে ইসিজি করার পর আমরা দেখি তিনি মারা গেছেন।
দেলদুয়ার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএম ফেরদৌস বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন এবার টাঙ্গাইল-৬ (দেলদুয়ার-নাগরপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। যার কারণে বিভিন্ন জায়গায় জনসংযোগ করার জন্য সভা-সমাবেশ করছেন কয়েক দিন যাবত। তার ধারাবাহিকতায় সোমবার দেলদুয়ার উপজেলার দেওলী এলাকায় নির্বাচনি জনসভা শেষ করে এলাসিন এলাকায় অপর একটি প্রচারণায় অংশগ্রহণ করার জন্য যাবার পথে হৃদযন্ত্রে আক্রান্ত হন।
হামিদুল হক মোহন ৮ আগস্ট ১৯৫২ সালে টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলার মঙ্গলহোড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আইনউদ্দিন আহমেদ ছিলেন পাথরাইল ইউনিয়নের দীর্ঘদিনের চেয়ারম্যান ও সমাজসেবক।
মাওলানা ভাসানীর ঘনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে তিনি ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
মহান মুক্তিযুদ্ধে টাঙ্গাইল হাইকমান্ডের সদস্য হিসেবে সাহসিকতার পরিচয় দেন। স্বাধীনতার পর নির্বাচিত হন বিআরডিবি টাঙ্গাইল ও দেলদুয়ারের চেয়ারম্যান।
শহীদ জিয়াউর রহমানের আমলে ‘দূতপুল’-এর সদস্য হিসেবে উপমন্ত্রীর মর্যাদা লাভ করেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে টানা ১৭ বছর দায়িত্ব পালন করেন।
নিজ গ্রাম মঙ্গলহোড়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ৭ বার দায়িত্ব পালন করেছেন পাথরাইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে, বর্তমানে একই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তার তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠেছে ফাজিলহাটি তমিজ উদ্দিন গার্লস হাইস্কুল, বরুহা হাইস্কুল, আটিয়া শাহানশাহী গার্লস হাইস্কুল। তাছাড়া তিনি ছিলেন টাঙ্গাইল নাট্যমহলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সরগম’-এর অন্যতম চালিকাশক্তি।
টাঙ্গাইল জেলা মোহামেডাম স্পোটিং ক্লাবের সভাপতি, টাঙ্গাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রথম নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান এবং দীর্ঘদিন টাঙ্গাইল জেলা ফুটবল লীগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
১৯৭১ সালে তিনি বিয়ে করেন ভাষাসৈনিক সৈয়দ আব্দুল মতিনের ছোট বোন নুরুন্নাহার পুটিকে।