
প্রেমিকাকে তুষ্ট করতে দাদির কাছে টাকা চেয়ে না পাওয়ায় নাতি অনিক হাসান হৃদয় গলা কেটে খুন করেছেন দাদি আকলিকা খাতুনকে (৬৫)। এ ঘটনা ঘটেছে গত শনিবার পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের বড়মজিদপুর গ্রামে।
রোববার সন্ধ্যায় এ খুনের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত নাতি অনিক হাসান হৃদয় (১৯) রংপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আদালতের বিচারক মন্তাজ আলী এ জবানবন্দি গ্রহণ করেন।
অভিযুক্ত আসামি তার জবানবন্দিতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন বলে আদালতের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, গত শনিবার পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের রড়মজিদপুর গ্রামে আকলিমা বেগম (৬৫) খুন হন। পরে ওই বৃদ্ধার গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আকলিমা বেগম ওই এলাকার মো. হাকিম মিয়ার স্ত্রী ছিলেন।
ঘটনার পর পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা প্রথমে হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু খুঁজে পাচ্ছিল না।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে। সকালে প্রতিবেশীরা ঘর থেকে রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
হত্যার ঘটনার পর পীরগঞ্জ থানা পুলিশ ক্লুলেস এ হত্যার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহাঙ্গীর হোসেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকার সাভার এলাকা থেকে নিহতের নাতি অনিক হাসান হৃদয়কে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে, পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অনিক তার প্রেমিকাকে তুষ্ট করতে দাদির কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। দাদি ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সে ক্ষুব্ধ হয়ে দাদিকে রাতে খুন করে পালিয়ে যায়।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, অনিক হাসান হৃদয় হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। হত্যার উদ্দেশ্য ও পেছনের কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ সময় তিনি জানান, জবানবন্দিতে হৃদয় দাদির কাছে ১০ হাজার টাকা চেয়েছিল। না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে দাদিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে সে পালিয়ে সাভারে যায়। সেখান থেকে তাকে গ্রেফতার করে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ।
ওসি আরও জানান, নিহতের ভাই ওবায়দুল হক অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথমে ‘ক্লুলেস’ এই খুনের মামলাটির কোনো সূত্র পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে খুনিকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খুনের আলামত হিসেবে ধারাল অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছে।