Image description

চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে ক্ষোভ-অসন্তোষ, উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্রমেই অচলদশার দিকে ধাবিত হচ্ছে বন্দরের স্বাভাবিক আমদানি-রফতানি, ইয়ার্ডে মজুদ ও পরিবহণ কার্যক্রম। বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারী, সচেতন নাগরিকমহল এবং বন্দর ব্যবহারকারীদের (স্টেক হোল্ডার) মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে অনেক প্রশ্ন-সন্দেহ গুঞ্জন। এমনিতেই সমগ্র দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কারখানা, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থানসহ সর্বক্ষেত্রে মহামন্দা বিরাজ করছে। জনগণ তাকিয়ে আছে দ্রুতই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবেÑ আসবে নির্বাচিত সরকার, কাটবে সঙ্কট। এ অবস্থায় প্রধান বন্দরে নতুন কোনো সঙ্কট ও অচলাবস্থা কারও কাম্য নয়। দেশের প্রধান এই সমুদ্র বন্দরের হৃৎপি- খ্যাত নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনা দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেয়ার লক্ষ্যে নতুন করে আবারো তোড়জোড় চলছে।

এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ‘সুজন’ চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী গতকাল শনিবার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর কৌশলগত বন্দর এবং বন্দর-সম্পদ। এটি আমরাই পরিচলনা করবো। পলাতক ফ্যাসিবাদী হাসিনার আমলে (২০২৩-২৪ সালে) এনসিটি দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ডকে পরিচালনায় দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। তবে বাস্তবায়ন হয়নি। বর্তমানে নেভির ড্রাইডকের দক্ষ পরিচালনাধীন লাভজনক এনসিটিকে অহেতুক ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে ইজারায় দিয়ে হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়ন কোন স্বার্থে কার এজেন্ডা? অথচ চট্টগ্রাম বন্দর সম্প্রসারণে বে-টার্মিনাল প্রকল্পে সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ প্রচুর বিনিয়োগ ও উন্নয়নে প্রস্তুতÑ মর্মে অন্তর্বর্তী সরকারিকর্তাদের কথার ফুলঝুরি এখন কোথায়? চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টমসের সমন্বিত অটোমেশন, বন্দরের প্রধান লাইফ লাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও রেলপথের সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি অবকাঠামো সুবিধা বৃদ্ধির জরুরি আবশ্যকতা আজও পূরণ হয়নি। বিভিন্ন দেশের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে সন্দেহের যথেষ্ট কারণ আছে, ডিপি ওয়ার্ল্ড এখানে যেসব প্রযুক্তি নিয়ে আসতে পারে তাতে ইসরাইলের প্রযুক্তিও রয়েছে। তার মানে ‘মোসাদ’ আসার পথ সুগম করা হচ্ছে কিনা ভেবে দেখতে হবে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রচলিত চার্জ-ফি-মাশুল-ডিউজ ইত্যাদি একলাফে হঠাৎ করেই বাড়ানো হয়েছে ৪১ শতাংশ পর্যন্ত। যারা সেই বাড়তি মাশুল দিবেন অর্থাৎ ব্যবসায়ী-শিল্পপতি, বন্দর ব্যবহারকারীদের রাখা হয়েছে অন্ধকারে; তাদের সঙ্গে মাশুল বৃদ্ধি নিয়ে কোনো আলোচনাই করা হয়নি। বাস্তবে সেই বর্ধিত মাশুলের খেসারত দিতে হবে দেশের ভোক্তা ক্রেতা সাধারণকে। এর বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন মতাদর্শ নির্বিশেষে সমগ্র ব্যবসায়ী-শিল্পোদ্যোক্তা সমাজ, বন্দরের ব্যবহারকারীরা। তারা একজোট হয়ে প্রতিবাদে নেমেছেন। ঐক্যবদ্ধ ব্যবসায়ী-শিল্পপতিরা চট্টগ্রাম বন্দরের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে স্বাধীন পরিচালক রাখারও দাবি তুলেছেন।

এ প্রসঙ্গে একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মইনুল ইসলাম গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের ট্যারিফ একলাফে ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি ঠিক হয়নি। ধাপে ধাপে বাড়ানো উচিৎ ছিল। ৪০ বছর পর বাড়ানো হয়েছে, আগে বৃদ্ধি করা হয়নিÑএসব কথা এখন কেন বলা হচ্ছে। এতোদিন বাড়ায়নি সেটা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সরকারি মহলের দুর্বলতা। এরজন্য একলাফে তো ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি যৌক্তিক নয়; বরং ধাপে ধাপে বাড়াতে হবে। তাহলে মাশুল বৃদ্ধি পেলেও তা সহনীয় হবে। বন্দরের প্রবীণ শ্রমিক নেতা কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার বলেন, একতরফা মাশুল চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সাথে সরকারের আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত সমাধান করতে হবে। অন্যথায় মাশুলের বোঝা টানতে হবে দেশের নিরীহ জনগণকে।

বন্দরের সর্ববৃহৎ, সর্বাধুনিক ভারী যন্ত্রপাতি সজ্জিত এবং টানা ১৭ বছর যাবত ধারাবাহিক মুনাফা অর্জনকারী কন্টেইনার স্থাপনা হচ্ছে নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি)। যা চট্টগ্রাম বন্দরের প্রতিবছর মুনাফা বাবদ নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত। সর্বাধুনিক ভারী যান্ত্রিক সরঞ্জামসমূহও বন্দরের টাকায় বিদেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম নেভাল ঘাঁটির লাগোয়া এবং ভূ-কৌশলগত নিরাপত্তার কারণে এনসিটির অবস্থান স্পর্শকাতর বলে আসছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগণ। এনসিটি গত ৭ জুলাই থেকে আগের প্রাইভেট অপারেটরের (সাইফ পাওয়ারটেক) তুলনায় অনেক বেশি দক্ষতা, সক্ষমতা, স্বচ্ছতা, গতিশীলতার সঙ্গে পরিচালনা করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ড্রাইডক লি. (সিডিডিএল)। এরফলে ইতোমধ্যে ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কন্টেইনার হ্যান্ডলিং বৃদ্ধি পেয়েছে। মাসওয়ারী হিসাবে গত আগস্টে কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। যা সর্বমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে। নেভির ড্রাইডকের এনসিটি পরিচালনায় সাফল্যের কারণে গত জুলাইয়ের আগে পর্যন্ত ডিপি ওয়ার্ল্ডকে নিয়ে যে ক্ষোভ-অসন্তোষ, শ্রমিক-রাজনৈতিক আন্দোলন, সন্দেহ ছিল তা প্রায় কেটে যায়। চট্টগ্রাম বন্দরের মোট আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশ আসে এবং কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ৪৪ শতাংশই হয়ে থাকে এনসিটির মাধ্যমে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের সমগ্র জনগণ তথা ১২ কোটি ভোটার দীর্ঘ ষোলো বছর পর আগামী রমজানের আগেই ফেব্রুয়ারিতে ঘোষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটদানে উদগ্রিব। ইতোমধ্যে যাত্রা শুরু করেছে নির্বাচনী ট্রেন। এ অবস্থাায় হঠাৎ ‘নন-ইস্যুকে ইস্যু’ করে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে নেভির ড্রাইডকের দক্ষ, লাভজনক পরিচালনাধীন চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটিকে ডিপি ওয়ার্ল্ড কোম্পানিকে হস্তান্তরের বিষয়টি। তদুপরি কোনো ধরনের টেন্ডার প্রক্রিয়া ছাড়াই ২৫ বছরের জন্য ইজারা দেয়ার প্রস্তুতি চলছে। এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কোম্পানিটির চুক্তি সম্পন্ন করার টার্গেট হচ্ছে আগামী নভেম্বর, বড়জোর ডিসেম্বরের মধ্যেই। সরকারের পক্ষ থেকে গত ১২ অক্টোবর নৌ-পরিবহন সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এ প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন। এনসিটির সঙ্গে বন্দরের লালদিয়ার চর টার্মিনাল এবং ঢাকার কেরাণীগঞ্জের পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কন্টেইনারসহ তিনটি টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি অপারেটরদের সঙ্গে ডিসেম্বরের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হবে। এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে চুক্তির একটা লক্ষ্য ছিল বলেও জানান তিনি। তাছাড়া বন্দরের মাশুল ৪১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির বিষয়ে উক্ত সভায় নৌ-পরিবহন সচিব বলেন, ‘কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় আন্তর্জাতিক অপারেটর নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। তাদেরও মুনাফার বিষয় আছে। তাই মাশুল কমানোর কোনো সুযোগ নেই। সমীক্ষার ভিত্তিতে এই মাশুল নির্ধারণ করা হয়েছে। যদিও এই হার একটু বেশি’।

ডিপি ওয়ার্ল্ডকে এনসিটি ইজারা প্রদানের চুক্তির প্রস্তুতি প্রসঙ্গে বৃহত্তর শ্রমিক-কর্মচারী জোট চট্টগ্রাম শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) যুগ্ম আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম বন্দর সংযুক্ত শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের নেতা, সাবেক বন্দর সিবিএ সেক্রেটারি কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার গতকাল শনিবার দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের হৃৎপি- ও লাভজনক স্থাপনা নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিতর্কিত ডিপি ওয়ার্ল্ড কোম্পানিকে কিংবা কোনো বিদেশি অপারেটরকে দেয়া যাবে না। এনসিটি বন্দরের হাতে রেখে বর্তমানে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান ড্রাইডকের মাধ্যমে যেভাবে দক্ষ পরিচালনা হচ্ছে সেভাবেই থাকতে হবে। এখানে বিতর্কিত ডিপি ওয়ার্ল্ড অথবা অন্য কোনো বিদেশি বেনিয়া বা মাফিয়ার জায়গা নেই। এনসিটি ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ইজারাদানের তোড়জোড়ের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) উদ্যোগে আগামী ২২ অক্টোবর বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ আখতারুজ্জামান সেন্টারের মোড়ে এক প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেখান থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় হয়ে বন্দরমুখী বিক্ষোভ মিছিল করবে বলে জানান তিনি। প্রসঙ্গত ইতোমধ্যে গত ১০ অক্টোবর সিএমপির এক গণবিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী এক মাসের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর ও আশপাশ এলাকায় মিছিল-মিটিং-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমদানি-রফতানি পণ্য পরিবহণে যাতে বিঘœ না ঘটে, জট তৈরি না হয় এরজন্য সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ প্রশাসন।

এদিকে চট্টগ্রামে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় সক্ষমতা ও জাতীয় নিরাপত্তা : চট্টগ্রাম বন্দর ও বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান বক্তা অর্থনীতিবিদ ও গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বন্দর এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত। এর অর্থ, এই এক মাস যেন প্রতিবাদ না হয়। তাদের ইচ্ছা আগামী ১১ নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী ও বিপজ্জনক একটি চুক্তিতে যাওয়া। বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালকে বিনা টেন্ডারে বিদেশিদের হাতে তুলে দেয়া দেশের জন্য নিরাপত্তাঝুঁকি তৈরি করবে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর দরকার হলে সেটা করবেন সামনে নির্বাচিত সরকার। আপনাদের এত তাড়াহুড়া কিসের? কোথাও কি মুচলেকা দেয়া আছে; যে চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশি কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দিতেই হবে?’ সভায় অন্যান্য বক্তা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশি কোম্পানিকে দিলে দেশের নিরাপত্তাঝুঁকি বাড়বে। বর্তমানে যারা উপদেষ্টা আছেন, তারা উঠেপড়ে লেগেছেন ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ছেড়ে দিতে। লালদিয়ার চরের সংবেদনশীল এলাকাও বিদেশিদের দেয়া হচ্ছে। বে-টার্মিনালেও প্লট ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেয়া হচ্ছে। এগুলো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত।

‘সুজন’ চট্টগ্রামের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী ইনকিলাবকে আরো বলেন, দেশের জনগণ ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ সুন্দর নির্বাচনের দিকেই তাকিয়ে আছে। যাতে অন্তর্বর্তী সরকার সুন্দরভাবে বিদায় নেন। নির্বাচনই তাদের মূল কাজ। অথচ ডিপি ওয়ার্ল্ডকে আনা হচ্ছে বিদেশি কোন এজেন্ডা বাস্তবায়নে? নাকি আখের গোছাতে? বন্দর বা এনসিটি কী অচল হয়ে গেছে? দেশের এককালে লাভজনক পাটকল, টেক্সটাইল মিলগুলো বন্ধ হলেও গত ১৪ মাসে এ সরকার বন্ধ কারখানাগুলো চালুর কি করেছে? শুধু মুখে বলা হচ্ছে পলিথিনের বিকল্প পাটের ব্যাগের কথা; বাস্তবে তা কাজে দেখা নেই। জিবুতির বন্দর পরিচালনায় ডিপি ওয়ার্ল্ডকে দেয়ার পর তা জাতীয় স্বার্থবিরোধী প্রমাণিত হওয়ায় তারা একতরফা চুক্তি বাতিলে বাধ্য হয়। অ্যাডভোকেট আখতার কবির চৌধুরী আরো বলেন, গত ২১ মে’২০২৫ ইং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ জামান অফিসার্স অ্যাড্রেসে বলেছিলেন, ‘বন্দর পরিচালনা সম্পর্কিত স্পর্শকাতর বিষয়ে আগামীতে জনগণের নির্বাচিত সরকার, স্থানীয় জনগণ ও ব্যবসায়ী, বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া মঙ্গলজনক হবে’। তা সত্বেও বিদেশি কোম্পানিকে এনসিটি দেয়ার জন্য এতো তড়িঘড়ি কেন? সরকার বিদেশি অপারেটরকে সুযোগ দিতেই এক লাফে ৪১ শতাংশ মাশুল বৃদ্ধি করেছে। ব্যবসায়ীদের সাথে কোনো আলোচনার সুযোগই দেয়া হলো না। এর জেরে তৈরি হচ্ছে অচলাবস্থা।

এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার ও অন্যান্য খোলা পণ্যসামগ্রী বন্দরের ভেতরে পৌঁছানো ও ডেলিভারি পরিবহণে ব্যবহৃত ভারী ট্রেলারসহ গাড়ি বন্দরে প্রতিবার প্রবেশের মাশুল আগের ৫৭ টাকার স্থলে এখন চার গুণ বৃদ্ধি করে ২৩০ টাকা করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে গতকাল শনিবারসহ চারদিন ধরে ট্রেলার চালক ও মালিকরা ট্রেলার ও ভারী গাড়ি বন্দরে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। আর তাতে বন্দরের আমদানি রফতানিমুখী কন্টেইনারসহ পণ্য পরিবহণে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। গতকাল ট্রেলার মালিকরা উক্ত চার গুণ প্রবেশ ফি চাপিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে সল্টগোলা মোড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করে। ট্রেলার চালক-মালিকরা অঘোষিত কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন। জানা গেছে, গত ১৫ অক্টোবর থেকে বন্দরে ৪১ শতাংশ মাশুল কার্যকর হয়। এর মধ্যে ভারী যানবাহনের প্রবেশে আগে মাশুল ছিল ৫৭ টাকা। তা প্রায় চার গুণ করে ২৩০ টাকা করা হয়েছে। এরপর ঘোষণা ছাড়া গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখেন ট্রেলার ও গাড়ি মালিকরা।