
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন শেষ হয়েছে। শুক্রবার সকালে আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল এককভাবে রেকর্ড ভোটে জয়ী হয়েছে। তবে এ নির্বাচনের খরচ পরিকল্পনার থেকে অনেক বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে আমাদের পূর্বের বরাদ্দের তুলনায় অনেক বেশি খরচ হয়েছে। আমরা এখনো পূর্ণাঙ্গ হিসাব করতে পারিনি। দুই একদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ হিসাব করে সংখ্যাটা জানাতে পারব।
নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সফলভাবে নির্বাচন শেষ করতে পেরেছি। এটা সবার সহযোগিতার ফল বলে মনে করি। ফলাফলের বিষয়ে কোনো প্রার্থী বা প্যানেল কোনো অভিযোগ দেয়নি।
নির্বাচনের আগে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ ও প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক সেতাউর রহমান জানিয়েছিলেন, রাকসু নির্বাচনে মোটামুটি ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ হবে ব্যালট ছাপানোর কাজে।
নির্বাচনের ফলাফল শিক্ষার্থীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া রাকসু নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে সব আবাসিক হল এবং কেন্দ্রীয় সংসদে শিবির সমর্থিত প্রার্থী এবং প্যানেল জয় লাভ করেছে। তবে এই ফলাফল নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
কেন্দ্রীয় সংসদে শিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী নির্বাহী সদস্য পদে জয়ী হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছে। রেদওয়ানুল ইসলাম নামের এক শিক্ষার্থী ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ’ নামে ফেসবুকে গ্রুপে লিখেছেন, ৭২ ব্যাচের শিক্ষার্থী পাঁচ হাজার ভোট পায় কীভাবে? অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন ৭২ ব্যাচের একজন শিক্ষার্থী যে আসার কয়েক মাস হলো, নিজ ডিপার্টমেন্টই চেনে না সে কীভাবে এত ভোট পায়? ব্যাপারটা কী ন্যায্য হলো।
এদিকে আধিপত্য বিরোধী ঐক্য প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী মেহেদী সজীব এবং এজিএস প্রার্থী আকিল বিন তালিবকে নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তারা উভয়েই জুলাই অভ্যুত্থানের সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মেহেদী সজীব প্রথমে ভিপি পদে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে প্যানেল গঠন করলেও পরবর্তীতে অজানা কারণে থেমে যান উভয়েই। তবে মেহেদী সজীব শিবিরের প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদকে গোপনে সমর্থন দিয়েছেন এবং আকিল বিন তালিব শিবিরের প্যানেলের এজিএস প্রার্থী সালমান সাব্বিরকে সমর্থন দিয়েছেন। বিনিময়ে আকিল বিন তালিবকে সিনেট প্রতিনিধি হিসেবে শিবির সমর্থন দিয়েছে বলে ক্যাম্পাসে গুঞ্জন রয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে আকিল বিন তালিব থেমে না গেলে শিবিরের ভোট তার দিকে আসতো এবং ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের এজিএস প্রার্থী জাহিন বিশ্বাস এষার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী সজীবের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তা রিসিভ হয়নি।
আকিল বিন তালিব বলেন, যারা ভোটে জিততে পারেনি তারাই আমার কাজকে থামানোর জন্য এসব ছড়াচ্ছে। আমি প্রথমে একটা প্যানেলে থাকলেও ‘টিম ওয়ার্ক’ হচ্ছিল না দেখে আমি সরে এসেছি। আর একসঙ্গে এজিএস ও সিনেট প্রতিনিধি দুই পদে নির্বাচন করা আমার জন্য অনেক কঠিন হয়ে যাওয়ায় আমি এজিএস থেকে প্রত্যাহার করেছি।
তিনি আরও বলেন, আমি যদি কোনো প্যানেলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করেও থাকি সেটা আমার রাজনৈতিক বিচক্ষণতা, আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। সবাইকে আহ্বান করবো, মিথ্যা ছড়ানো বাদ দিয়ে এখন আমি যেহেতু শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি, আমায় কাজে ম্যান্ডেট দেন আমি কাজ করি।