Image description

প্রায় সাত মাসের আলোচনায় শেষ হয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক। তবে ঝুলে আছে নোট অব ডিসেন্ট থাকা বিষয়ের ভাগ্য এবং গণভোট আয়োজনের সময়সীমা নিয়ে বিতর্ক। এসব সমাধানের ভার পড়েছে ঐকমত্য কমিশনের ওপর।

এরইমধ্যে ১৫ অক্টোবর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান করার কথা জানিয়েছে কমিশন। তবে, তার আগে চূড়ান্ত করতে হবে সনদ।

 
বিশেষ আদেশ জারি করে নির্বাচনের আগে গণভোটের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দল। অন্যদিকে বিশেষ আদেশে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি। এর পরিবর্তে অধ্যাদেশ জারির পক্ষে দলটি। নির্বাচনের আগে গণভোটকে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার প্রয়াস হিসেবে দেখছে বিএনপিসহ কয়েকটি দল।
 
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে কমিশন। দলগুলোর ঐক্য না হওয়ায় বিশেষজ্ঞ প্যানেল যে মতামত দিয়েছে, তার ভিত্তি ধরে হাঁটছে কমিশন।
 
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে গণভোট দেয়ার প্রস্তাবনা দিতে যাচ্ছে ঐকমত্য কমিশন। জাতীয় নির্বাচনের দিনই হতে পারে গণভোট। তবে সময়সীমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারের হাতে ছেড়ে দিতে চায় কমিশন।
 
 
গণভোটে থাকছে দুটি প্যাকেজ। একটি যেসব ঐকমত্য হয়েছে, আর দ্বিতীয়টি যেসব বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। এই দুটি প্যাকেজেই হা/না ভোট দিতে পারবেন ভোটাররা।
 
ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘গণভোটে থাকবে শুধুমাত্র সংবিধান সংশ্লিষ্ট বিষয়। ঐকমত্য তৈরি হওয়া এবং অনৈক্য থাকা বিষয় নিয়ে হবে দুটি প্যাকেজ। যাতে থাকবে ৩০টি সংস্কারের উল্লেখ। হ্যা/না ভোটে মতামত জানাবে ভোটাররা। 
গণভোটের সময়সীমা সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ছাড়তে চায় বলেও জানান কমিশন।
 
সনদ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হলে দেশে ফ্যাসিজম কিংবা স্বৈরতন্ত্র থেকে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের এই প্রধান বলেন, ‘একটা ফ্যাসিস্ট সরকার বিতাড়িত হয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিজম কিংবা স্বৈরতন্ত্র এখনো বহাল রয়েছে।  যদি জুলাই সনদের সব বিষয় যদি বাস্তবায়িত না হয়, তাহলে অবশ্যই আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক এবং কাঠামোগত সব সংস্কার হবে না। যে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই, সে ব্যাপারেও কিছুটা সন্দেহ থেকে যাবে।’
 
 
জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় দলগুলোকে কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান।
 
তিনি বলেন, ‘যদি ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা না যায়, তাহলে দেশ একটি দির্ঘমেয়াদী সংকটে পড়তে পারে। জাতীয় স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটা মানসিকতা তৈরি হওয়া দরকার। যাতে জাতীয় নির্বাচন বাধাগ্রস্ত না হয় এবং গণভোটটি আয়োজনের ক্ষেত্রে যেন কোনো ধরনের অসুবিধা নায়, এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐকমত্য হওয়া দরকার।’    
 
উল্লেখ্য: রাষ্ট্রের বিভিন্ন খাতে মৌলিক সংস্কারে দুদফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ৬৭টি বৈঠক করে ঐকমত্য কমিশন।