
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিপেটায় গত ২৯ আগস্ট আহত হন নুরুল হক নুর। এরপর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে গুঞ্জন চলছিল, একই ছাতায় আসতে পারে তরুণদের দুই রাজনৈতিক দল গণঅধিকার পরিষদ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। যে দল দুটির শীর্ষ নেতারা ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যুতে লড়েছিলেন একই প্ল্যাটফর্মে, একই সঙ্গে।
প্রতিষ্ঠার তিন বছর পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পায় গণঅধিকার পরিষদ। আর ফেব্রুয়ারিতে আত্মপ্রকাশ হওয়া এনসিপি এখন নিবন্ধন ও প্রতীকের অপেক্ষায়। তবে বেশ কয়েক দফা আলোচনা চললেও, পুরোনো সতীর্থদের একই দলে ভেড়ার সম্ভাবনা এখন ক্ষীণ বলেই ধারণা দিচ্ছে দল দুটির নেতারা।
মূলত দলের নাম, নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক কাঠামোসহ মৌলিক কিছু ইস্যুতে মতবিরোধের কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে দল দুটির একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়া। তবে একীভূত না হলেও দল নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার সম্ভাবনা কতটুকু, সে প্রশ্নেও দুই মেরুতে গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপি।
একীভূতকরণের বিষয়ে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, এনসিপির কয়েকজন নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের কারণে একীভূত হওয়া থমকে গেছে। আমি জানি না, আদৌ তা হবে কি না, তবে আমরা বিষয়টি নিয়ে বসবো।’
অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘দুটি দল এক হয়ে গেলে সুষম বণ্টন হবে। হীনমন্যতার জায়গা থেকে এনসিপির কয়েকজন নেতৃবৃন্দ একটা ইতিবাচক প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করতে নানা ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য দিচ্ছে। এমনকি গণমাধ্যমের সামনে গণঅধিকার পরিষদকে নিয়ে নানান ধররে বিষদ;গার করেছে। তারা বলেছে, গণঅধিকার পরিষদের অনেক জ্যেষ্ঠ নেতা নাকি এনসিপিতে যোগ দেয়ার জন্য যোগাযোগ করছেন। এমন মিথ্যাচার আমাদের কাছে খারাপ লেগেছে।’
এনসিপির সঙ্গে নির্বাচনী জোটের বিষয়ে রাশেদ বলেন, ‘দলটির সঙ্গে আমরা নির্বাচনী জোট করবো না। এই সম্ভাবনা একেবারেই জিরো। এনসিপি এত বড় দল না যে, তাদের সঙ্গে জোটে গিয়ে আমরা ক্ষমতার অংশীদার হতে পারবো। যদি তারা এখনো আন্তরিক থাকে, তাহলে আমরা উভয় মিলে একটি বড় দল হবো। সেক্ষেত্রে আমরা অত্যন্ত ইতিবাচক।’
অভিযোগের বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদ এনসিপিতে যোগ দেবে কী দেবে না, তা নিয়ে এরইমধ্যে আমরা পার্টির বৈঠকে আমরা অনেক ধরনের কথা বলেছি। এখানে অনেক ইতিবাচক দিক ছিল, নেতিবাচক অনেক বিষয় নিয়েও কথা হয়েছে। এটা এখনো একটা প্রাথমিক আলোচনার পর্যায়ে। যেহেতু আমরা এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি, এ কারণে এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করার সুযোগ তৈরি হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মধ্যপন্থি যে দলগুলো রয়েছে, তাদের সঙ্গে এক ধরনের বোঝাপড়া কিংবা নির্বাচনী জোট যদি তৈরি হয়, তাহলে সবার জন্য ওপেন প্লেস। সেটা গণঅধিকার পরিষদ হতে পা আবার যেকোনো দলও হতে পারে।