Image description

শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে গিয়ে ক্ষেপে গেলেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী মডেল থানার ওসি (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খান। এক পর্যায়ে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ এখন বানরের মতো হয়ে গেছে!’

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। এমন কথোপকথনের একটি ভিডিও এসেছে কালবেলার হাতে।

জেলার কয়েকজন সাংবাদিক খবর সংগ্রহের জন্য কটিয়াদী থানায় যান এবং ওসি তদন্তের কক্ষে প্রবেশ করেন এবং তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন। কারণ গত ৭ অক্টোবর থানায় পিকনিকের আয়োজনের পর ওসি তদন্তসহ পুলিশ সদস্যদের অসুস্থ হওয়ার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।

জানা যায়, জেলার কয়েকজন সংবাদকর্মী বৃহস্পতিবার রাতে ওই পুলিশ কর্মকর্তার কক্ষে তার শারীরিক অবস্থার কথা জিজ্ঞেস করেন। পরক্ষণেই তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন তিনি। জানতে চাওয়া হয় এমনভাবে কেন কথা বলছেন?

সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর প্রতিবেদন নিয়ে তিনি বিরক্ত আছেন। সাংবাদিকরা বিষয়টি পরিষ্কার করার চেষ্টা করলে তিনি ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম কখন? যিনি রিপোর্ট করেছেন, তাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করুন। আন্দাজে রিপোর্ট করলে তো হবে না। থানায় যদি পিকনিক হয়, সেটা কি নিউজ করার বিষয়?

সাংবাদিকরা যুক্তি দেন, যেহেতু থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, তাই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। উত্তরে ওসি তদন্ত বলেন, ধরে নিন আমরা থানায় পিকনিক করেছি, এতে কারও কাছ থেকে চাঁদাবাজি করেছি? নিজের টাকায় খাওয়ার অধিকার তো আছে! এরপর সাংবাদিকরা যখন বিদায় নিতে উদ্যত হন, তখন হাবিবুল্লাহ খান বলেন, ‘পুলিশ হয়ে গেছি এখন বানরের মতো। রিকশাওয়ালার মার খায় পুলিশ। বানরের খাঁচায় বন্দি করে নাচাচ্ছে আমাদের। আমি অন্য চাকরির চিন্তা করছি।’

সাংবাদিকরা এ মন্তব্যে আপত্তি জানালে তিনি বলেন, ‘বানর হয়ে গেছি তো এখন’— তাই বললাম।

তবে এ বিষয়ে জানতে ওসি তদন্ত হাবিবুল্লাহ খানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুলিশকে বানর বলার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী কালবেলাকে বলেন, এভাবে কথা বলা সমীচীন নয়। বিপক্ষে নিউজ হলেও ওই পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষুব্ধ হতে পারেন না, সংশোধন হতে পারেন। বিষয়টি আমি দেখব। চাকরি করবেন কি করবেন না ওটা তার ব্যক্তিগত বিষয়।

উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে কটিয়াদী মডেল থানায় পিকনিকের আয়োজনের পর খাবার খেয়ে ওসি তদন্তসহ অন্তত ১০ পুলিশ সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে ছয়জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং চিকিৎসাশেষে তারা ছাড়পত্র নেন। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়।

অসুস্থদের মধ্যে ছিলেন ওসি তদন্ত মো. হাবিবুল্লাহ খান, এসআই মো. বাছেদ মিয়া, কনস্টেবল উজ্জ্বল মিয়া, কাওসার মিয়া, সাদ্দাম হোসেন, সোহাগ মিয়া, সাথী আক্তার ও মো. ওয়াসিমসহ আরও কয়েকজন।