
ইরানের ৫০ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও জাহাজের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে বাংলাদেশমুখী একাধিক ইরানি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) চালানের জাহাজও রয়েছে। ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তেহরানের জ্বালানি রপ্তানি নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া এবং ইরানের সহায়তাপ্রাপ্ত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর অর্থায়ন বন্ধের অংশ হিসেবেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান অফিস অব ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল (ওএফএসি) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। ওএফএসির বিবৃতিতে তারা ৫০ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান গোপনে বিলিয়ন ডলারের তেলজাত পণ্যের রপ্তানি সহজতর করেছিল বলে অভিযোগ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
ওএফএসি জানায়, গত বছর থেকে চারটি আলাদা বাণিজ্যিক ব্যবস্থার মাধ্যমে ইরানি এলপিজির চালান বাংলাদেশে পৌঁছানো নিশ্চিত করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, লাইবেরিয়াভিত্তিক শিপিং কোম্পানি টাইটান সিওয়েজ লিমিটেড গাম্বিয়া পতাকাবাহী জাহাজ গ্যাস জেইনার (IMO 88188430) মালিক ও পরিচালনাকারী। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সাল থেকে এই জাহাজের মাধ্যমে ইরানের এলপিজি বাংলাদেশে পাঠিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এ ছাড়া, গত বছরের শেষ দিকে আরেক সরবরাহকারী কোমোরোস পতাকাবাহী এডিএ (ADA) নামের একটি জাহাজের মাধ্যমে বাংলাদেশে ইরানি এলপিজি পাঠায়, যা এর আগে ক্যাপ্টেন নিকোলাস নামে চলাচল করত।
ওএফএসি আরও জানায়, ২০২৪ ও ২০২৫ সালে স্লোগাল নামে এক বিদেশি কোম্পানি ইরানি এলপিজি কিনে শ্রীলঙ্কায় পাঠায়, যা পরে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ—দুই দেশের ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছে।
চলতি বছরের (২০২৫) শুরুর দিকে অকটেন এনার্জি এফজেডসিও নামের একটি সরবরাহকারী পানামা পতাকাবাহী গ্যাস ডিওর জাহাজে করে ১৭ হাজার টন ইরানি এলপিজি বাংলাদেশে পাঠায় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ক্যাপ্টেন নিকোলাস গত বছর ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরের আউটার অ্যাংকারেজে বিএলপিজি সোফিয়া (BLPG Sophia) নামের একটি লাইটার জাহাজে এলপিজি খালাসের সময় আগুন ধরে যায়। ৩৪ হাজার টন এলপিজি বহনকারী ওই জাহাজটি আইনি জটিলতায় মাসের পর মাস আটকে ছিল।
দীর্ঘ আলোচনার পর চলতি বছরের ৫ সেপ্টেম্বর থেকে পুনরায় গ্যাস খালাস শুরু করার অনুমতি পায় জাহাজটি। বর্তমানে এটি এখনো চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করা রয়েছে।
যদিও কোনো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান বা সরকারি সংস্থার নাম নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই, তবে এসব চালানের গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশ হওয়ায় দেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়বে।