
বগুড়ার ধুনটে স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ও মোবাইল ফোনে সেই দৃশ্য ধারণ মামলায় আলামত নষ্টের অভিযোগে থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা এবং আসামি প্রভাষক মুরাদুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জিয়া উদ্দিন মাহমুদ মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে দুই আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া পিবিআইর পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে ১ হাজার ৫০০ পাতার চার্জশিট দাখিল করেন। বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর পিপি মোজাম্মেল হক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন ধুনটের শৈলমারি গ্রামের বাসিন্দা জালশুকা হাবিবর রহমান ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক মুরাদুজ্জামান ওরফে মুকুল এবং গাজীপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-২-এ কর্মরত ধুনট থানার সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালা।মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ ও সেই দৃশ্য নিজের মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করেন মুরাদুজ্জামান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে ধুনট থানায় মুরাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেন ধুনট থানার তৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা।
ওই মামলায় মুরাদুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের সময় জব্দ করা মোবাইল ফোনে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের প্রমাণ পায় পুলিশ। কিন্তু মামলা তদন্তকালে ওসি কৃপা সিন্ধু বালা আসামির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে জব্দ করা মোবাইল ফোন থেকে ধর্ষণের ভিডিওসহ বেশকিছু আলামত নষ্ট করেন।
বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন মামলার বাদী। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে ধুনট থানা থেকে প্রত্যাহার করে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া পিবিআইর পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, সাক্ষ্য-প্রমাণে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মুরাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে চার্জশিট এবং মামলার আলামত নষ্ট করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।