
খানাখন্দ ও দীর্ঘ যানজটে দুর্ভোগ চরমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশ। জেলার আশুগঞ্জ থেকে খাটিহাতা মোড় পর্যন্ত সড়ক যানজটের ‘রেড জোন’। এই ১২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ২৪ ঘণ্টারও বেশি। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই সড়কের গণপরিবহনের যাত্রী ও সংশ্লিষ্টদের। প্রায় প্রতিদিনই সংবাদপত্রের শিরোনাম হচ্ছে এই মহাসড়ক।
এ অবস্থায় বুধবার (৮ অক্টোবর) সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের এই মহাসড়ক পরিদর্শনের কথা রয়েছে। তাই তোড়জোড় করে চলছে খানাখন্দ ভরাটের কাজ।
সড়ক ও জনপথ, জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার এ সড়কের কাজ চলছে ৭-৮ বছর ধরে। ভারতীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড এ কাজ করছে। নানা কারণে একাধিকবার বন্ধ হয়েছে কাজ। মহাসড়কের একপাশের কাজ প্রায় শেষ হলেও বিভিন্ন স্থানে গর্তের কারণে সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সরাইল উপজেলার বেড়তলা থেকে খাটিহাতা মোড় পর্যন্ত খানাখন্দের কারণে প্রতিদিনই দেখা দিচ্ছে দীর্ঘ যানজট। এই যানজট মাঝেমধ্যে আশুগঞ্জ থেকে সরাইলের শাহবাজপুর পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পরিবহনের যাত্রী, অ্যাম্বুলেন্সের রোগী ও পণ্যবাহী ট্রাকের। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
মহাসড়কের যানজট নিয়ে নিয়মিত সংবাদপত্রের শিরোনাম হচ্ছে। এ অবস্থায় বুধবার (৮ অক্টোবর) প্রকল্পের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশ পরিদর্শনে আসার কথা রয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফওজুল কবির খানের। এ লক্ষ্যে রোববার (৫ অক্টোবর) থেকে সড়কের খানাখন্দের ভরাটে নেমে শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সরাইল বিশ্বরোড গোলচত্বর এলাকায় তিন স্তরে ইট বিছানোর কাজ চলছে। তোড়জোড় করে চলছে মহাসড়ক মেরামতের কাজ। হঠাৎ গতি ফিরেছে চারলেন প্রকল্পের অন্যান্য কাজের। উপদেষ্টাকে দেখাতে খানাখন্দ মেরামত কাজ দ্রুত করতে সড়কের পাশে নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে যানজট তৈরি হয়েছে। যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে এই মহাসড়কের সরাইল অংশে।
এই মহাসড়কের নিয়মিত মাইক্রোবাস চালক আজিজুল হক বলেন, ভিআইপি কেউ এই সড়ক দিয়ে আসার খবর হলে তখন কোনোভাবে জোড়াতালি দিয়ে যানচলাচলের উপযোগী করে তোলা হয়। কিন্তু কয়েকদিন পরই আবার পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক্সপ্রেস নামে এক বাসের চালক আবুল বাশার বলেন, ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসতে সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগার কথা। সেখানে গত কয়েক মাস যাবৎ যানজটের কারণে আমরা পৌঁছাচ্ছি ৭-৮ ঘণ্টায়। যাত্রীরা এ নিয়ে ক্ষুব্ধ। কিন্তু গতকাল দেখলাম যানজট নাই, কাজ চলছে দ্রুত। দেখে ভালো লাগছে। শুনলাম উপদেষ্টা আসবে বলে এই কাজ দ্রুত করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ আখাউড়া চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, উপদেষ্টা মহোদয় আসবেন বলে শুনতে পেয়েছি। কিন্তু আমরা এখনো অফিসিয়ালি কোনো সূচি পাইনি। মহাসড়ক নির্মাণে যে জটিলতা ছিল তা কেটে গেছে। আমরা নতুন করে আরও ১৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছি। দুই তিন দিনের মধ্যে কাজের গতি পুরোদমে শুরু হবে।