Image description

কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে মানবপাচারকারীদের বিরুদ্ধে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। একরাতের অভিযানে দুটি চক্রকে ধরতে সক্ষম হয়েছে বিজিবি। পাচারের সময় উদ্ধার করা হয়েছে ১৩ রোহিঙ্গাকে। শুধু গত দুই মাসেই টেকনাফ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ২০১ রোহিঙ্গাকে।

 

রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিজিবির টেকনাফ বিচ ক্যাম্প থেকে শুরু হয় অভিযান। সঙ্গে ছিল চ্যানেল 24। মানবপাচার চক্রের গোপন আস্তানা খুঁজে বের করতে আটক দুই রোহিঙ্গাকে সঙ্গে নেয় বিজিবি। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মেরিন ড্রাইভ ধরে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে কচ্ছপিয়া পাহাড়ের গহীনে পৌঁছায় অভিযানের টিম।

জংলি এলাকায় অবস্থিত একটি বাড়ি ঘিরে ফেললে, ভেতর থেকে দরজা না খোলায় তা ভেঙে প্রবেশ করে বিজিবি। এ সময় এক নারীসহ তিন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়। বিজিবির দাবি, জনপ্রতি দুই লাখ টাকা চুক্তিতে তাদের ট্রলারে করে মালয়েশিয়া পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল চক্রটি। তারা জানায়, আটক হওয়া বাড়িটির মালিক মানবপাচারকারী দলের সঙ্গে জড়িত।

এরপর টেকনাফ শহরের আরেকটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় আরও ১০ রোহিঙ্গা কিশোরকে। মালয়েশিয়া যাওয়ার আশায় তারা চক্রটির কাছে গিয়েছিল। উদ্ধারকৃত কিশোররা জানায়, দুই দিন ধরে তাদেরকে একটি রুমে আটকে রাখা হয়। এ দুইদিন তাদের মুড়ি ছাড়া কিছুই খেতে দেয়া হয়নি।

এ সময় মানবপাচারকারী দুই সদস্যকে আটক করে বিজিবি। এ সময় মানবপাচারের প্রক্রিয়া জানতে চাইলে, তারা নিজেদের মধ্যে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে এবং একে অপরকে দালাল হিসেবে অভিযুক্ত করে।

বিজিবির তথ্য অনুযায়ী, গত দুই মাসে টেকনাফ সীমান্তে মানবপাচারের সময় উদ্ধার হয়েছে ২০১ জন। এর মধ্যে ১৯৬ জন রোহিঙ্গা এবং ৫ জন স্থানীয়। এছাড়া আটক করা হয়েছে মানবপাচার চক্রের ৩২ সদস্যকে, যাদের মধ্যে ১৪ জন রোহিঙ্গা।

বিজিবি আরও জানায়, টেকনাফ সীমান্তে সক্রিয় অন্তত চারটি মানবপাচার সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করা হয়েছে।

  • চক্র-১: কচ্ছপিয়া সিন্ডিকেট (মালয়েশিয়া সংযোগ)
  • চক্র-২: কচ্ছপিয়া সিন্ডিকেট (স্থানীয় সহযোগী)
  • চক্র-৩: বড়ইতলী সিন্ডিকেট (রোহিঙ্গা/বহিরাগত সংযোগ)
  • চক্র-৪: রাজারছড়া পাহাড় গ্রুপ (সশস্ত্র রোহিঙ্গা সিন্ডিকেট)

এ চক্রগুলোর কাছে AK-47, G-3, G-4 এর মতো ভারী অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে বলেও দাবি করছে বিজিবি।