Image description
ওসমানী বিমানবন্দরে পাঁচ বছরে কাজ হয়েছে ২২ শতাংশ

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মেগা প্রকল্প অনুমোদনের দুই বছর পর শুরু হয়েছিল কাজ। প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর হলেও এর মধ্যে পার হয়েছে পাঁচ বছর। ২ হাজার ৩০৯ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকায়। বারবার সময় ও ব্যয় বাড়লেও শেষ হয় না সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের কাজ। পাঁচ বছর কাজ হয়েছে ২২ শতাংশ। প্রকল্প শুরুর দুবার মেয়াদ বাড়ানোর পর সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পের মেয়াদ তৃতীয় দফা বাড়িয়ে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে। এ সময় প্রকল্পের ব্যয়ও ৪৭০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ২ হাজার ৭৮০ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়।

প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কাজের গতি না বাড়ালে বর্ধিত সময়েও প্রকল্পটি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।  জানা যায়, সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ, আধুনিকায়ন ও সুযোগসুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মেগা প্রকল্পটি গৃহীত হয়। পাস হয় ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। প্রকল্পের নকশা তৈরির কাজ পায় কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান ‘ইয়োশিন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন’ ও ‘হিরিম আর্কিটেক্ট অ্যান্ড প্ল্যানার্স’। তাদের নকশার ভিত্তিতে ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দরপত্র আহ্বান করে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। প্রকল্পের কাজ পায় চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘বেইজিং আরবান কনস্ট্রাকশন গ্রুপ’। এরপর ২০২০ সালের ১১ মে ঠিকাদারি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তিমতো কাজ শুরু করে প্রায় ২২ শতাংশ করার পর নকশায় ত্রুটি ধরা পড়ে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক রুটে উড়োজাহাজ চলাচল বৃদ্ধি পেলে নকশা অনুযায়ী নির্মিত টার্মিনাল ভবনটি ভাঙতে হবে। এ ছাড়া বোর্ডিং ব্রিজের নকশায়ও ভুল ধরা পড়ে। এ অবস্থায় বন্ধ করে দেওয়া হয় নির্মাণকাজ। এর মধ্যে টার্মিনাল ভবনের ১৪৪৩টি পাইলের মধ্যে অধিকাংশের নির্মাণকাজ শেষ হয়ে গেছে। কার্গো টার্মিনাল ভবনের ২৭২টি ও প্রশাসনিক ভবনের ১২৯টি পাইলের কাজও সম্পন্ন হয়ে যায়। এরপর নকশা সংশোধন করা হয়। সংশোধিত প্রকল্পে দীর্ঘমেয়াদি কিছু কাজ কমানো ও স্বল্পমেয়াদি কিছু কাজ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে সংশোধিত নকশায় এ পাইলগুলো ভাঙার প্রয়োজন পড়বে না বলে জানিয়েছেন প্রকল্পসংশ্লিষ্টরা। বেবিচক সূত্র জানায়, মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বছরে ২০ লাখ যাত্রী ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবেন। তখন আন্তর্জাতিক রুটের গন্তব্য ও ফ্লাইট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে বিমানবন্দরটি দিয়ে বছরে প্রায় ৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেন।

ওসমানী বিমানবন্দর থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডন, ম্যানচেস্টার ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে সরাসরি ফ্লাইট চালু রয়েছে।

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্পের পিডি মইদুর রহমান মোহাম্মদ মওদুদ জানান, একনেকে সংশোধিত প্রকল্প পাস হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই অফিস আদেশ আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্ধিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতেই হবে। এজন্য কাজের গতি বাড়ানোর বিকল্প নেই।