
ওষুধ আমদানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে গত ১ অক্টোবর থেকে কাজও শুরু করেছে মার্কিন প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২৫ সেপ্টেম্বর ঘোষণা করেছেন, আগামী ১ অক্টোবর থেকে তাঁর দেশে ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধ আমদানির ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। ভারতের ওষুধশিল্প মার্কিন বাজারের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। তাই এ সিদ্ধান্তের কারণে দেশটির ওষুধ খাত ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হতে পারে। ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ২০২৫ সালের ১ অক্টোবর থেকে আমরা যেকোনো ব্র্যান্ডেড বা পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করব; যদি না কোনো প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ওষুধ উৎপাদনের কারখানা তৈরি করছে। যদিও এর বিরোধিতা করে ‘ফার্মাসিউটিক্যাল রিসার্চ অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অব আমেরিকা’। সংগঠনটির দাবি, চলতি বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রে দরকারি ওষুধের অর্ধেক মিটেছে আমদানিতে। একটু একটু করে বড় হওয়া বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পেরও অন্যতম রফতানি গন্তব্য বিশ্বের শীর্ষ ধনী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে কতটা প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পে?
ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সেন্টারের (আইটিসি) তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ২১ হাজার ২৬৬ কোটি ৭ লাখ ডলারের ওষুধ আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২০ সালে যার পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৯৪৩ কোটি ১০ লাখ ডলার। পরিসংখ্যান বলছে, মার্কিন বাজারে ওষুধের আমদানি লাগাতার বাড়লেও দেশটিতে উত্থান-পতনে চলছে বাংলাদেশের রফতানি। সবশেষে গেল অর্থবছরে ১ কোটি ৮৮ লাখ ডলার মূল্যের ওষুধ রফতানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৪৬ লাখ ডলার কম। তবে, ওষুধ শিল্পে মার্কিন শতভাগ শুল্ক কার্যকর হলে বাংলাদেশে কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির নির্বাহী সদস্য ওয়ান ফার্মা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টপ্রাপ্ত ওষুধ বাংলাদেশ খুব একটা রফতানি করে না। তাই ওষধু শিল্পে শতভাগ শুল্ক আরোপে ভারত ও চীন যতটা প্রভাবিত হবে, বাংলাদেশ ততটা প্রভাবিত হবে না। যে কারণে এখনই আমাদের ক্ষতির সুযোগ নেই। বরং আমাদের জন্য ভালো হবে বলে উল্লেক করেন তিনি। মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি পূরণে যে উদ্যোগ নিয়েছে, এর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ বাড়তি সুবিধা পেতেও পারে।
চীন-ভারতের তুলনায় বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা সুবিধাজনক অবস্থানে হলেও বিকল্প বাজারে বাংলাদেশ বাড়তি প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে বলেই মত অর্থনীতিবিদদের। সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশ বিকল্প বাজারে বাড়তি প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে পারে। উচ্চশুল্কে ওষুধ কিনতে গেলে মার্কিন বায়ারদের চীন ও ভারতের তুলনায় বাংলাদেশ থেকে খরচ কম পড়বে।