
বাউফলে জুলাই অভ্যুত্থানের স্বাস্থ্য কার্ডধারী আহত আরিফুল রহমান মুন্সি নামের একজনকে সামান্য ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জুলাই যোদ্ধার আরিফুর রহমামের স্ত্রী শান্তা বেগমের দাবি করেন, স্থানীয় প্রভাবশালী একজন ব্যক্তিগত তার সাথে সময় কাটাতে চাইলে, তিনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়েই তাকেসহ তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২অক্টোবর) রাতে আহত আরিফকে গ্রেফতার করে বাউফল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তফা।
শান্তা বেগমের অভিযোগ করে বলেন, ৮ বছর ও ৭ বছরের দুই শিশু সন্তান নিয়ে তারা কালিশুরি বানিজ্যিক এলাকায় ভাড়া থাকেন। পাশের বাসার ভারাটিয়া এক নারীর সাথে তুচ্ছ ঘটনায় তার কথা-কাটাকাটি হয়। হাতাহাতিতে ওই নারী সামান্য আঘাত পায়। পরে স্থানীয় প্রভাবশালী মাহতাব মোল্লা বিষয়টি আপোষ মিমাংসার কথা বলেন। মাহতাব তাকে প্রস্তাব দেন ব্যক্তিগত ভাবে সময় কাটাতে। এতে রাজি না হওয়ায় ওই নারীকে দিয়ে তাকে ও তার চিকিৎসাধীন স্বামীকে আসামি করে মামলা করায় মাহতাব। মামলায় এরেস্ট করবে না বলেও তাকে সময় দিতে বলা হয়। তিনি বকাঝকা করলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তার স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মাহতাব মোল্লা বলেন, অভিযোগ করা নারীর চরিত্রগত সমস্যা আছে। আমার পুরোনো বাড়ি দিক দিয়ে সম্পর্কে চাচাতো ভাই আলামিনের স্ত্রী রুনা বেগমকে কোপানোর ঘটনায় আরিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আঘাত ছোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভিডিওতে আঘাত দেখা গেছে৷ এরপরে ২০১১ সালে একজনকে তিন মাস সাসপেন্ড করিয়েছেন এমন প্রসঙ্গ টেনে তিনি হুমকি দিয়ে বলেন, আমি সেই লোক আমার বিরুদ্ধে গেলে কিংবা অভিযোগ প্রচার করলে আমি ব্যবস্থা নেবো।
পুলিশের এফআইআর সূত্রে জানা গেছে, ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে তুচ্ছ ঘটনায় পাশের বাসার রুনা বেগমকে (২৬) পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে জুলাই আন্দোলনের আহত আরিফ মুন্সি (৩৫) ও তার স্ত্রী শান্তা বেগম (২৫)।
হত্যার উদ্দ্যেশ্যে মাথায় তিনটি কোপ দেয়া হয়েছে বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার বাদি হলে আলআমিন মোল্লা নামের এক ব্যক্তি।
তবে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রার খাতার তথ্য বলছে, আহত রুনা বেগমের কেইস হিস্টোরি অনুযায়ী তার কপালে সামান্য একটি কাটা চিহ্ন আছে। আঘাতটি ৩ সে. মি. দৈর্ঘের ও ০.৫ সে.মি ডেপ্ট ছিলো।
আহত জুলাই যোদ্ধারা জানিয়েছেন, গ্রেফতার আরিফ এখনো আহত এবং তালিকাভুক্ত একজন জুলাই যোদ্ধা। ১৯ জুলাই ঢাকার মহাখালী পুলিশ ও ছাত্রলীগ হামলায় তার হাত পা ভেঙে ফেলা হয় এবং মাথায়ও আঘাত করা হয়। তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি ইতোমধ্যেই বিভিন্ন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। সামান্য বিষয় চাইলে মিমাংসা করা সম্ভব ছিলো বলে দাবি করেন তারা। আরিফ দম্পতির ছোট দুই শিশু সন্তান, ওর স্ত্রী গ্রেফতার হলে তাদের কি হবে! প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে তারা আন্দোলনের ডাক দেবেন। (সট- জুলাই অভ্যুত্থানের আহত কাওসার)
আরিফকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নেন বাউফল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তফা। তিনি জানান, কারো চাপে নয়। নিয়মিত মামলায় আরিফকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি জুলাই আন্দোলনে আহত কিনা বিষয় তিনি জানেন না। যদিও তিনি সরকারের ইস্যু করা স্বাস্থ্য কার্ড দেখেছেন এবং পরীক্ষাও করেছেন।