Image description

গাজা থেকে আর মাত্র ১০০ মাইল দূরে আছে 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা'। এবারের যাত্রায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মীদের এ নৌবহরটি এখনো বড় ধরনের কোনো আক্রমণ বা বাধার সম্মুখীন হয়নি। ইসরায়েলি হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তারা।

এই বহরে থাকা একমাত্র বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলম আজ বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, আমার 'ড্রোন ওয়াচ' দেখাচ্ছে- আরও এক ঘণ্টা যেতে হবে, যেখানে আমরা সাধারণত সম্ভাব্য আক্রমণের প্রতি নজর রাখি। আমার ওয়াচে এর আগে একটি তুর্কি জাহাজ দেখা গেছে, তবে এখন পর্যন্ত বিপজ্জনক কিছু ঘটেনি।

নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান

একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতারা গাজার অবরোধ ভাঙতে যাত্রা করা 'গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা'র নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

ইতালি ও গ্রিস এক যৌথ বিবৃতিতে ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছে যে, তারা যেন ফ্লোটিলার অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং কনস্যুলার সুরক্ষা প্রদান করে। 

সেই সঙ্গে তারা গাজার জন্য পাঠানো মানবিক সহায়তা 'লাতিন প্যাট্রিয়ার্কেট অব জেরুজালেমের' মাধ্যমে বিতরণের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেছে, যদিও এই প্রস্তাব আগেই প্রত্যাখ্যান করেছেন ফ্লোটিলা কর্মীরা।

ইসরায়েলি আরব সংস্থা 'আদালাহ' জানিয়েছে, ফ্লোটিলা কর্মীদের আটক করা হলে তারা আইনি সহায়তা দিতে প্রস্তুত। 

সংস্থাটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, 'ইসরায়েল সরকার অংশগ্রহণকারীদের দীর্ঘ সময় আটকে রাখার পরিকল্পনা করেছে, যার কোনো আইনি ভিত্তি নেই।' 

আদালাহ আরও বলেছে, 'এসব হুমকি মূলত মানবিক উদ্যোগকে দমন করতে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনকে বৈধতা দিতে নেওয়া কৌশলের অংশ।'

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, 'গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার মুখে বিশ্বব্যাপী মানুষের নীরবতা এবং অবরোধ ভাঙতে ফ্লোটিলা গঠন করা হয়েছে।'

সংস্থাটি রাষ্ট্রগুলোর প্রতি ফ্লোটিলার নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

এদিকে, মার্কিন কংগ্রেসের অন্তত ২০ জন সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও-কে চিঠি লিখে গাজার উদ্দেশ্যে যাওয়া ফ্লোটিলার সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন। 

কংগ্রেস সদস্য রাশিদা তালাইব, ইলহান ওমর, গ্রেগ কাসার এবং আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ এ চিঠিতে সই করেন। 

তারা লিখেছেন, 'এই বেসামরিক যাত্রীদের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।'

এরপরেও ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিওন সার এক বিবৃতিতে ফ্লোটিলাকে যাত্রা থামানোর জন্য প্রচ্ছন্ন হুমকি দিয়ে বলেন, 'এখনো সময় আছে। অনুগ্রহ করে সহায়তা শান্তিপূর্ণভাবে সাইপ্রাস, আশকেলন মেরিনা কিংবা আশেপাশের অন্য যেকোনো বন্দর দিয়ে পাঠান।'

এখন গোটা বিশ্ব তাকিয়ে আছে এই মানবিক মিশনের পরিণতির দিকে। আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারের প্রতি ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা আগামী দিনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হতে চলেছে।