Image description
চিকিৎসাসেবা বন্ধ

আবার  কুয়াকাটা হাসপাতাল চিকৎসকশূন্য হয়ে গেছে। কর্মরত থাকা একমাত্র চিকিৎসক সুপ্রিয়া দাস ১৭ সেপ্টেম্বর বদলিজনিত কারণে অন্যত্র চলে গেছেন। এখন এখানকার চিকিৎসাসেবা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যেন নামেই কুয়াকাটা ২০ শয্যার হাসপাতাল। বছরের পর বছর এমনটাই চলে আসছে।চিকিৎসক ও  চিকিৎসার সংকট কাটছে না। জানা গেছে, এই হাসপাতালে চারজন জুনিয়র কনসালট্যান্ট, একজন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ও একজন মেডিক্যাল অফিসারসহ ছয়জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও এখানে বর্তমানে কোনো চিকিসক কর্মরত নেই।

সিনিয়র স্টাফ নার্স কর্মরত রয়েছে পাঁচ জন। এ ছাড়া একজন ওয়ার্ড বয়, একজন ল্যাবরেটরি এটেনডেন্ট, একজন আয়া, একজন অফিস সহায়ক, একজন কুক, একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাগজপত্রে কর্মরত রয়েছে। এর মধ্যে আবার একজন ওয়ার্ড বয় প্রেষণে কলাপাড়ায় আর ল্যাবরেটরি এটেনডেন্ট প্রেষণে সিভিল সার্জন অফিস পটুয়াখালীতে কর্মরত রয়েছেন। চিকিৎসকসহ এই হাসপাতালটিতে মোট ১৭ জন পদায়ন করার কথা থাকলেও ১২টি পদ খালি রয়েছে। ফলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে।

একজন উপসহকারী মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে কখনো কখনো জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা ও বহির্বিভাগ চালানো হচ্ছে, জোড়া তালি দিয়ে। পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় চিকিৎসা সেবার এমন বেহাল দশায় এখানে আগত পর্যটকসহ সাধারণ মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা ফারুক হোসেন জানান, হাসপাতালটি চালুর পর থেকে আজ অবধি পূর্ণাঙ্গভাবে লোকবল পদায়ন করা হয়নি। ফলে এখানকার পুলিশি থানা মহিপুর, লতাচাপলী ও কুয়াকাটা পৌরসভার লক্ষাধিক মানুষ তাদের চিকিসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
জানা গেছে, ২০১০ সালের পহেলা জুলাই কুয়াকাটার ২০ শয্যার হাসপাতালে আফরোজা আকবর নামের একজন চিকিৎসক পদায়ন করা হয়। তিনি যোগদানের পর থেকেই চিকিৎসাসেবা শুরু হয়। কিন্তু ২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে ওই চিকিৎসক লাপাত্তা হয়ে গেছেন। হাসপাতালের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। এর পর থেকেই হাসপাতালটিতে কখনো দুইজন, কখনো একজন চিকিৎসক দিয়ে নামেই চিকিৎসাসেবা চালু ছিল।

সবশেষ কর্মরত থাকা একমাত্র চিকিৎসক মুমসাত সায়েম পুনম দুই মাসের একটি কোর্সে অংশগ্রণের জন্য গত ১৭ এপ্রিল কর্মস্থল ত্যাগ করেন। এর পর থেকেই চিকিৎসকশূন্য হয়ে যায় হাসপাতালটি। পরবর্তীতে ডা. সুপ্রিয়া দাস কর্মরত ছিলেন। তিনিও এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে বদলিজনিত কারণে অন্যত্র চলে গেছেন। এখন চিকিৎসকশূন্য হয়ে গেছে। ফলে পর্যটকসহ সাধারণ রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। 
কুয়াকাটা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রহমান ইমতিয়াজ তুষার জানান, পর্যটন এলাকার গুরুত্ব বিবেচনা করে এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে জরুরি ভিত্তিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক পদায়ন করে পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা দরকার। তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা  ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী জানান, কুয়াকাটাসহ কলাপাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগের জনবল সংকটসহ দ্রুত চিকিৎসক পদায়নের জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করানো হয়েছে। তবে কুয়াকাটা হাসপাতালের জরুরি ও বহির্বিভাগ সচল রাখতে একজন উপসহকারী মেডিক্যাল অফিসারকে আপাতত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।