
খাগড়াছড়িতে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই নতুন মোড় নিয়েছে ঘটনা। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাত দিন ধরে চলা অবরোধের পাশাপাশি পাহাড়ি-বাঙালি সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এবং সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। অথচ মেডিকেল রিপোর্ট বলছে, ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
মেডিকেলের ওই রিপোর্টের কপি আমার দেশের হাতে এসেছে। এতে স্বাক্ষর করেছেন ডা. জয়া চাকমা, ডা. মীর মোশাররফ হোসেন, ডা. নাহিদ আক্তার।
জেলা সদর হাসপাতালের এক তদন্ত কর্মকর্তার বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্র। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, চিকিৎসকদের গঠিত তিন সদস্যের কমিটি নির্ধারিত পরীক্ষার পর কোনো ধর্ষণের আলামত পাননি।
তবে খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাবের সরাসরি কিছু না বললেও জানান, আমরা একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছি, যা জেলা পুলিশ সুপারকে জমা দেয়া হবে। বিস্তারিত সেখান থেকে জানা যাবে।
আমার দেশের হাতে আসা মেডিকেল রিপোর্ট
গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার চেংগীলা এলাকায় এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ তোলা হয়। অভিযোগে বলা হয়, প্রাইভেট টিউশনের পর বাড়ি ফেরার পথে এক বা একাধিক ব্যক্তি কিশোরীকে মুখে চেতনানাশক প্রয়োগ করে নির্জন স্থানে নিয়ে যায় এবং নির্যাতন চালায়।
এই অভিযোগের পর থেকে পাহাড়ে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয় পাহাড়ি সংগঠন ইউপিডিএফ (মূল) এর কর্মীরা অবরোধে অংশ নেয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ায়।
এর আগে রোববার রাতেও রাঙামাটির গুইমারা এলাকায় ইউপিডিএফ সদস্যদের গুলিবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, এই ঘটনার পেছনে প্রতিবেশী রাষ্ট্র এবং উগ্রবাদী গোষ্ঠীর ইন্ধন রয়েছে। তারা পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতা সম্প্রতি বেড়েছে। এসব গোষ্ঠী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশে ঢুকছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।