Image description

তরুণ মনে করেন বিএনপি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে জিতবে। জামায়াত দ্বিতীয় স্থানে এসেছে ২১.৫ শতাংশ উত্তরদাতার পছন্দ হিসেবে।

এই ধারণা যথাযথ হোক বা না হোক, প্রথমবারের ভোটারদের সিদ্ধান্তকে ইতিমধ্যেই প্রভাবিত করছে। ক্যাম্পাস ও জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে সাদৃশ্য স্পষ্ট। যেভাবে শিবিরের সাংগঠনিক শক্তি ও উপস্থিতি শিক্ষার্থীদের চোখে তাদের অবশ্যম্ভাবী বিজয়ী হিসেবে তুলে ধরেছে, বিএনপিও একইভাবে জাতীয় রাজনীতিতে গতিশীলতার সুবিধা পাচ্ছে।

বিএনপির জয়ের নিশ্চয়তা তুলে ধরে নিবন্ধে বলা হয়, চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অনলাইন ফোরাম- সবখানেই একই কথা শোনা যাচ্ছে: বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন যাই হোক, জাতীয় নির্বাচনে অন্তত আগামী মেয়াদে বিএনপিই জিতবে।

এই যুক্তি প্রবল শক্তিতে কাজ করে বলে উল্লেখ করেন নিবন্ধকার। বলেন, “অর্থহীন ভোট দেয়ার ভয় তরুণদের ছোট বামপন্থি দল, স্বতন্ত্র প্রার্থী বা নতুন রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে সমর্থন থেকে বিরত রাখছে। যত বেশি ভোটার কৌশলগত কারণে বিএনপির দিকে ঝুঁকছে, তত বেশি তারা অজেয় মনে হচ্ছে। আর যত অজেয় মনে হচ্ছে, ততই আরও ভোটার তাদের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ‍নির্বাচনের কথা তুলে ধরে নিবন্ধে বলা হচ্ছে, অনেক বামপন্থি বা মধ্যপন্থি প্রার্থীর প্রতি সহানুভূতি থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা শেষ পর্যন্ত শিবিরকে ভোট দিয়েছে। খুব শিগগিরই জাতীয় পর্যায়েও একই চিত্র দেখা যেতে পারে, যখন তরুণ ভোটাররা নিজেদের আদর্শকে একপাশে সরিয়ে রেখে বিজয়ী দলে থাকার আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দেবে। যদি এই ধারা বজায় থাকে, বিএনপি বিশালভাবে লাভবান হতে পারে।

বিএনপিকে এখনো হাসিনাপরবর্তী কাঠামোর একমাত্র কার্যকর বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে উল্লেখ করে নিবন্ধে বলা হয়, তাদের আছে সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা, রাজনৈতিক ঘাঁটি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জনগণের চোখে এক ধরনের অবশ্যম্ভাবিতা। বামপন্থি ও স্বতন্ত্রদের জন্য এটি এক দুঃস্বপ্ন। তাদের কিছু অনুরাগী সমর্থক ও নতুন নীতি-প্রস্তাব থাকতে পারে। কিন্তু কৌশলগত ভোটের শীতল হিসাব-নিকাশে আবেগ ও চিন্তা যথেষ্ট নয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম বলে ভোটারদের বোঝাতে না পারলে তারা উপেক্ষিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে, যেমনটি ঘটেছে ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোটে। তথাকথিত মধ্যপন্থিরাও একই সমস্যায় ভুগছে। শেখ হাসিনার পতনের পর যে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি (এনসিপি) কিছুদিন নিজেদের ‘মধ্যপথ’ বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছে, তাদের ছাত্রসংগঠনের পরাজয় দলটির বিশ্বাসযোগ্যতাকে ক্ষুণ্ণ করেছে। অনেক তরুণ ভোটারের কাছে এনসিপি এখন আর কার্যকর প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং একটি ‘অপচয় হওয়া ভোট’। ফলে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বিএনপি বনাম অন্য সবাই।

অন্যদিকে বিএনপির সব বিতর্ক জেতা বা সব ভোটারকে অনুপ্রাণিত করার দরকার নেই। তাদের শুধু এই বিশ্বাস টিকিয়ে রাখতে হবে যে তারাই একমাত্র দল যারা শাসনক্ষমতায় যেতে পারে। এই বিশ্বাসই যথেষ্ট হতে পারে তাদের পক্ষে পাল্লা ভারি করতে।

শীর্ষনিউজ