
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) লোক প্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী সুমাইয়া আফরিন রিনথিকে (২৩) ‘ধর্ষণের পর হত্যা’ করা হয়েছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আসামি কবিরাজ মো. মোবারক হোসেন। এবং তা দেখে ফেলায় হত্যা করা হয় সুমাইয়ার তাহমিনা বেগম ফাতেমাকে (৫২)।
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মোবারক হোসেন সুমাইয়াকে হত্যার আগে ধর্ষণ করেছিলেন। তার দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি অনুযায়ী, প্রথমে মোবারক ঝাড়ফুঁক দেখিয়ে সুমাইয়াকে বশ করে ধর্ষণ করেন। ঘটনাটি দেখে ফেলায় তিনি প্রথমে সুমাইয়ার মাকে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর সুমাইয়া বাঁধা দিলে তাকে গলাটিপে হত্যা করা হয়।
ওসি আরও জানান, ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া কাপড়, চাদর ও অন্যান্য সামগ্রী পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত ও ভিসেরা প্রতিবেদন হাতে আসার পর পুলিশ আদালতে চার্জশিট দাখিল করবে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত নয়। গ্রেপ্তারের পর মোবারক গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে কুমিল্লার ১ নম্বর আমলী আদালতের ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দেন এবং পরে কারাগারে পাঠানো হয়।
কবিরাজ মোবারকের বিরুদ্ধে আগে একাধিক ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগও রয়েছে। ২০২৩ সালের ২৪ জুন কুমিল্লার একটি মহিলা মাদ্রাসায় সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টা করেন মোবারক। বাধা দেওয়ায় ধারালো ছুরি দিয়ে হত্যা চেষ্টা করলে শিক্ষার্থী পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়, যা এড়াতে তিনি সৌদি আরবে চলে যান। পরে দেশে ফিরে আবারও ‘জ্বিন তাড়ানো’সহ নানা ধরণের কবিরাজির মাধ্যমে কুকর্ম চালু করেন।
মোবারকের বাড়ি জেলার দেবীদ্বার উপজেলার কাবিলপুর গ্রামে। স্থানীয়রা জানান, তিনি মাদ্রাসায় পড়ার সময় থেকেই কবিরাজি আয়ত্ত করেছিলেন এবং পরিবারে সম্পর্ক কম রাখতেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বর সকালে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরী এলাকায় নিজ ভাড়া বাসা থেকে সুমাইয়া ও তার মায়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে মোবারক হোসেনকে রাতেই বাগিচাগাঁও এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকাটাইমস