
শুক্রবার রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার কবর ঘিরে ভয়াবহ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে কবর খুঁড়ে লাশ উত্তোলন ও প্রকাশ্যে দাহ করা হয়। জুমার নামাজের পর শত শত মানুষ দরবার শরীফে হামলা চালায়। এতে প্রাণ হারান রাসেল মোল্লা (২৮) নামের এক যুবক, আহত হন অন্তত অর্ধশতাধিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী।
নিহত রাসেল মোল্লা দেবগ্রাম ইউনিয়নের যতু মিস্ত্রিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। দুই সন্তানের জনক তিনি। সহিংসতার সময় একইসঙ্গে আহত হন তার ছোট ভাই কলেজ শিক্ষার্থী সাজ্জাদ মোল্লা (১৭)। তিনি বলেন, তার বড় ভাই রাসেল মোল্লাকে যখন আহত অবস্থায় প্রথমে গোয়ালন্দ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখানেও তার ওপর হামলা চালায়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার সময় তার মৃত্যু হয়। এলাকার প্রভাবশালীদের চাঁদা না দেয়ার কারণেই নুরাল পাগলার কবর ভাঙার পেছনে প্রধান কারণ বলে সাজ্জাদ মোল্লা দাবি করেন। তিনি বলেন, কয়েক দফায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা কমিটি করে দরবারের ভক্তদের টাকা ভাগাভাগি করার কথা বলেন। কিন্তু সেটিতে রাজি না হওয়ায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার ওপর তাদের ক্ষোভ ছিল। পরে বিভিন্ন সংগঠন করে এই সহিংসতার সৃষ্টি করে।
প্রশাসনের ব্যর্থতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কবরের মাপকাঠি নিয়ে সব দাবি পূরণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রাচীর অনেক শক্তপোক্ত হওয়ায় সেটি সময়সাপেক্ষ ছিল। এ বিষয়ে গোয়ালন্দ থানার ওসি, ইউএনওসহ ঈমান আকিদা রক্ষা কমিটির সবাইকে জানানো হয়েছিল। তারা সকলেই বলেছিলেন, কোনো সমস্যা হবে না। এই দরবারের সামনে কোনো মিছিল হবে না। কিন্তু তারা আর কি করলো? আমার ভাইকেও হারালাম। এ বিষয়ে নিহত রাসেল মোল্লার স্ত্রী হাসি আক্তার মানবজমিনকে বলেন, আমার স্বামীর হত্যার বিচার করতে হবে। সরকার যদি মাজার ভাঙার বিচার আগে করতে পারতো তাহলে আজ আমি আমার স্বামীকে হারাতাম না।
এ বিষয়ে ঈমান-আকিদা রক্ষা কমিটির সদস্য ও রাজবাড়ী জেলা জামায়াতের আমীর এডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আমি এই বিষয়ে গোয়ালন্দ থানার ওসি’র উপস্থিতিতেই তাদের আশস্ত করেছিলাম। এও বলেছিলাম দরবার ঘিরে কোনো মিছিল হবে না। কিন্তু এই কমিটির গোয়ালন্দ এলাকার নেতারা মিছিলটি করে। পরে এই ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে।