Image description
 

চট্টগ্রাম নগরীতে প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস (৩৫) নামের এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ পার্লারের ওয়াশরুম থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় তার একটি ডায়েরিতে কয়েক লাইনের একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়।

গত মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নগরীর জিইসির মোড়ে নাদিয়াস মেকওভার পার্লারের ওয়াশরুম থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পার্লারের একটি ভিডিও এবং ছবি ছড়িয়ে পড়ে।

নিহত প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস রাউজান উপজেলার দেওয়ানপুর গ্রামের সমীর দে ও অঞ্জলী দে দম্পতির মেয়ে এবং বাঁশখালী উপজেলার সিকদার বাড়ির সজীব দত্তের স্ত্রী। তারা নগরীর আগ্রাবাদ এলাকায় বসবাস করতেন। দীর্ঘদিন ধরে নাদিয়া’স মেকওভারে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

 

প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, এটি আত্মহত্যা। গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওয়াশরুমে ঝুলছিল লাশটি। এ সময় তার একটি ডায়েরিতে কয়েক লাইনের একটি ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া যায়। ওই নোটে লেখা ছিল— ‘আচ্ছা আমি কি পাগল হয়ে যাচ্ছি? দায়িত্বের সঙ্গে আর পেরে উঠছি না। এত দায়িত্ব কেন আমার? আমি শান্তি চাই, জাস্ট রিলাক্স।’ তবে নিহতের পরিবারের দাবি, ঝুলন্ত অবস্থায় প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাসের পা ফ্লোরের সঙ্গে লাগানো ছিল।

প্রকাশিত ভিডিও এবং ছবিতে দেখা গেছে, প্রিয়াঙ্কা ওয়াশরুমের শাওয়ারের সঙ্গে ঝুলে আছেন। তবে একটি শাওয়ার ৫০ কেজি ওজন ভর নিল কিভাবে সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। আবার অনেকে প্রিয়াঙ্কার মৃত্যুকে পরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন। অনেকে প্রশ্ন রেখেছেন, পুলিশ নারীর মরদেহ উদ্ধার করলেও সন্দেহভাজন কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। চিরকুটের দোহাই দিয়ে দায় সেরেছে। চিরকুটে হাতের লেখা যে প্রিয়াঙ্কার সে বিষয়ে ফরেনসিক করেনি।

 

প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাসের সহপাঠীদের অভিমত, কে কোন ধর্মের তাতে কিছু যায় আসে না। প্রিয়াঙ্কা আমাদের ভালো বন্ধু ছিল। আমরা অনেক বিষয় একে অপরের সঙ্গে শেয়ার করি। সে তাও করত না। পারিবারিকভাবে সে মানসিক ডিপ্রেশনে ছিল। তার এমন মৃত্যু মানতে পারছি না। সে সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলত।

নিহতের বাবা সমীর দে বলেন, ‘সত্য-মিথ্যা আমি কি বলব, আমি আমার মেয়ের পা ফ্লোরের সঙ্গে লাগানো দেখেছি। মেয়ের মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি অস্বাভাবিক তদন্তকারীরা ভালো জানবেন।’

রাউজান পাহাড়তলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আইয়ুব খান জনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রিয়াঙ্কা আমাদের এলাকার সন্তান। সে অনেক মিশুক প্রকৃতির। সবার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলত। তার স্বপ্ন ছিল নিজে উদ্যোক্তা হয়ে রাউজানে একটি বড় ধরনের কাজ করবে। পার্লার মেকওভার নিয়ে সে বেশ কিছুদিন কাজ করেছে। আশা সফল হওয়ার আগে সে ঝরে পড়েছে। আমরা এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবি জানাই।

এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলইমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা। পার্লার থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।