Image description
 

চীন ও পাকিস্তান নতুন একটি যৌথ কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যার লক্ষ্য আগামী কয়েক বছরে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও ঘনিষ্ঠ ও কার্যকর করে তোলা। পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, তারা শুধু প্রতিবেশী রাষ্ট্রই নয়, বরং বন্ধু, অংশীদার এবং ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ হিসেবে কৌশলগত সহযোগিতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চায়।

 

চীনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। পরিকল্পনায় আরও উল্লেখ করা হয়, দুই দেশ পারস্পরিক সম্মান ও আস্থার ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বন্ধুত্বকে এগিয়ে নেবে, লাভজনক উন্নয়নের পথে একসঙ্গে কাজ করবে এবং বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে চলবে।

নতুন কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৫ থেকে ২০২৯ সালের মধ্যে চীন ও পাকিস্তান আরও শক্তিশালী রাজনৈতিক আস্থা গড়ে তুলবে, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক গভীর করবে, নিরাপত্তা সহযোগিতা বাড়াবে এবং জনগণের মধ্যে স্থায়ী বন্ধন দৃঢ় করবে। এতে শুধু দুই দেশের সম্পর্কই নয়, ভবিষ্যতে প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্যও একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত তৈরি হবে।

 

পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, দুই দেশের নেতৃত্বের ঐকমত্যের ভিত্তিতে কৌশলগত যোগাযোগ আরও জোরদার করা হবে। একই সঙ্গে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক ইস্যুতে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রাখা এবং সর্বাত্মক কৌশলগত অংশীদারিত্ব এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

 

এ প্রেক্ষাপটে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর (সিপিইসি)-এর প্রতি নতুন করে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে দুই দেশ। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অন্যতম অগ্রগামী প্রকল্প হিসেবে সিপিইসি-কে কেবল অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভিত্তি নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আরও শক্তভাবে বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানের “উড়ান প্রোগ্রাম”-এর ৫ই কাঠামোকে সিপিইসি করিডরের সঙ্গে সমন্বয় করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে, যেখানে রপ্তানি, ই-পাকিস্তান, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি ও অবকাঠামো এবং সমতা ও ক্ষমতায়নকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

পরিকল্পনায় স্পষ্ট করা হয়েছে, সিপিইসি ভবিষ্যতেও বিআরআই-এর উচ্চমানের সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। পাশাপাশি বৃহৎ অবকাঠামোগত প্রকল্পের সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ছোট কিন্তু কার্যকর উদ্যোগও নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন ও নিরাপত্তা একসঙ্গেই নিশ্চিত করার চেষ্টা চলবে।

চীন ও পাকিস্তানের এই যৌথ কর্মপরিকল্পনা শুধু দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককেই নয়, বরং আঞ্চলিক সহযোগিতা ও বৈশ্বিক সংহতির নতুন অধ্যায় রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।