
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ভয়ঙ্কর কিছু তথ্য। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্য দেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি জানান, নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালট বক্সে অন্তত ৫০ শতাংশ ভোট ভরে রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী। মামুনের দাবি অনুযায়ী, এই নির্দেশ এসেছিল সরাসরি শেখ হাসিনার কাছ থেকে।
তিনি আরও বলেন, আন্দোলন দমনে রাজনৈতিকভাবে গৃহীত সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয় হেলিকপ্টার থেকে গুলি, ব্লক রেইডসহ ভয়ঙ্কর সব কৌশল। এসব অভিযানে সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান ও ডিবি প্রধান হারুন ছিলেন অতি উৎসাহী। ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা আসতো তৎকালীন ডিজিএফআই থেকে, আর তা বাস্তবায়ন করতেন ডিবি প্রধান হারুন। আটককৃতদের ডিবি অফিসে নিয়ে সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় বাধ্য করার চেষ্টা হতো এবং তাদের পরিবারকেও ভয়ভীতি দেখানো হতো।
সাবেক আইজিপি জানান, র্যাবের বিভিন্ন ইউনিটে টিআইএফ নামে গোপন বন্দিশালা ছিল, যেখানে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সরকারের সমালোচকদের আটক করে নির্যাতন চালানো হতো। berখ্যাত ‘আয়নাঘর’ বন্দিশালা থেকেও অনেককে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। এসব অভিযানে র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা সরাসরি জড়িত ছিলেন।
মামুনের বক্তব্য অনুযায়ী, এসব নির্দেশ আসতো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে। কখনো শেখ হাসিনা নিজে, কখনো তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকী তা দিতেন।
অন্যদিকে, শেখ হাসিনা প্রকাশ্যে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশ্বাস দিলেও বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয় থেকেই এইচটি ইমামের নেতৃত্বে পুরো নির্বাচন নিয়ন্ত্রিত হয়। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাতেই ব্যালট বক্স পূর্ণ করার। সিইসি নুরুল হুদা সাংবিধানিক স্বাধীনতা হারিয়ে ইমামের নির্দেশে কাজ করেন। এভাবেই রাতের আঁধারে ব্যালট ভরার মাধ্যমে ইতিহাসে যুক্ত হয় এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। সেখানেও ডিবি হারুন ছিলেন অন্যতম প্রধান চরিত্র।