
আগামী ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে বাংলাদেশ গভীর সংকটে নিমজ্জিত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। ফ্যাসিবাদী শক্তির উত্থান রোধ করতে হলে, সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হবে। রাজনৈতিক দল, সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একত্র করতে হবে। না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ভয়ংকর পরিণতি ভোগ করতে হবে।’
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভাটির আয়োজন করে গণতন্ত্র মঞ্চ।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক সহিংস ঘটনা, প্রশাসনের নীরবতা এবং সন্ত্রাসী শক্তির দাপট দেখা গেল। একটি ছোট্ট ঘটনা নিয়ে চট্টগ্রামে দুই ছাত্র আইসিইউতে ভর্তি, যে কোনো সময় মৃত্যু হতে পারে। অথচ পুলিশ সেখানে যায়নি, পরে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করেছে। প্রশাসনের এমন উদাসীনতা নির্বাচনের জন্য বিপজ্জনক বার্তা দিচ্ছে। মান্না বলেন, সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূস যদি সব দলকে একত্র করতে না পারেন, তাহলে দেশের মানুষ আশা হারাবে।’ বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভালো নির্বাচনের জন্য বিএনপিরও দায়িত্ব নিতে হবে। শুধু অভিযোগে কাজ হবে না। এত বহিষ্কার আর অভিযোগের রাজনীতি মানুষকে আস্থা দিতে পারছে না। বিএনপির দায়িত্ব হলো– তারা যে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে চায়, তা প্রমাণ করা।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো কিছু বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে, তা একটি বড় অগ্রগতি। তবে বাস্তবায়নে জনগণের অনুমোদন লাগবে। আর যেসব বিষয় ঐকমত্য হচ্ছে না, সেগুলো রাজনৈতিক প্রস্তাব। এটা ফয়সালা করার সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ঘাটতির কারণে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে আস্থা রাখতে চাইলেও সরকারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তে জনগণের মধ্যে অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে।
আলোচনা সভায় ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনসহ আরও কয়েকজন বক্তব্য দেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেএসডির সিনিয়র সহসভাপতি তানিয়া রব।