
দীর্ঘদিনের সীমান্ত সমস্যা, তিস্তা জলবণ্টন নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং বাণিজ্যিক বৈষম্যের পর এবার ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হলো। ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের সঙ্গে অন্তত তিনটি স্থলবন্দর পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া এক স্থলবন্দর সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে।
নীলফামারির চিলাহাটি, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ এবং রাঙ্গামাটির তেগামুখ স্থলবন্দর সম্পূর্ণ বন্ধ, আর হবিগঞ্জের বালা স্থলবন্দর সাময়িক স্থগিত থাকবে। প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সভাপতিত্বে ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত নিছক প্রশাসনিক খরচ কমানোর কারণে নয়, বরং এটি একটি স্পষ্ট কূটনৈতিক বার্তা। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বিশেষত মিজোরাম ও ত্রিপুরার জন্য এই বন্দরগুলো গুরুত্বপূর্ণ রুট। এখন বিকল্প রুট খুঁজতে গিয়ে ভারতের সময় ও খরচ অনেক বেড়ে যাবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি আরও কয়েকটি বন্দর বন্ধ হয়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। কেবল অর্থনৈতিক ক্ষতি নয়, বরং ভারতের কূটনৈতিক প্রভাবও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ড. ইউনূস সরকারের নতুন নীতি দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে বহুমুখী আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনের পথে অগ্রসর হচ্ছে। চীন, রাশিয়া, তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা হচ্ছে। পাশাপাশি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন কৌশলগত বাস্তবতার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মোদির জন্য এটি বড় ধাক্কা। ঘরোয়া রাজনৈতিক চাপের মধ্যেই প্রতিবেশী বাংলাদেশকে হাতছাড়া হওয়া ভারতের জন্য এক বড় কূটনৈতিক ব্যর্থতা হিসেবে ধরা যেতে পারে। বাংলাদেশের বার্তা স্পষ্ট: দেশের স্বার্থ আগে, ভারতের সুবিধা পরে।