
তিন দফা দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ‘লংমার্চ টু ঢাকা’- এর অংশ হিসেবে ২৭ আগস্ট শাহবাগে অবস্থান নেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দুপুর দেড়টার দিকে তারা প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভব যমুনার দিকে যাত্রা শুরু করলে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ও লাঠিচার্জ ব্যবহার করা হয়। এতে বহু শিক্ষার্থী আহত হন, পাশাপাশি কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলমকে বহিষ্কারের দাবি তোলেন।
এরপর ২৮ আগস্ট ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) একটি ফেসবুক পোস্টে দাবি করে, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিসি মাসুদ আলমকে ঘিরে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। আলোচিত ছবিতে দেখা যায়, তিনি একজন আন্দোলনকারীর মুখ চেপে ধরছেন।
ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধান অনুযায়ী, ডিএমপির রমনা বিভাগের ডিসি মাসুদ আলমের আন্দোলনকারীর মুখ চেপে ধরার ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি নয়। প্রকৃতপক্ষে, আসল ছবিকেই এআই দিয়ে তৈরি বলে প্রচার করেছে ডিএমপি।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, অনুসন্ধানের শুরুতে আলোচিত ছবিটি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। বিশ্লেষণে ছবিতে এআই-জনিত কোনো অসংগতি পাওয়া যায়নি। সাধারণত এআই-তৈরি ছবিতে অস্বাভাবিক প্রতিবিম্ব, বিকৃত হাত বা মুখের গঠন, টেক্সটে ত্রুটি কিংবা সূক্ষ্ম অংশে ঘাটতি দেখা দেয়। তবে সংশ্লিষ্ট ছবিতে এসবের কোনো লক্ষণ নেই।
বিষয়টি নিয়ে আরও অনুসন্ধানে বাংলাদেশ প্রতিদিনের ফটোসাংবাদিক জয়িতা রায়ের ফেসবুক প্রোফাইলে ২৭ আগস্ট রাত ১টা ৬ মিনিটে প্রকাশিত একই ঘটনার একটি ছবি পাওয়া যায়। রিউমর স্ক্যানার জয়িতা রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইমেইলের মাধ্যমে ছবিটির মূল কপি সংগ্রহ করে। মেটাডাটা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ছবিটি ২৭ আগস্ট দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে তোলা হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কে বা কারা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই ছবিটি তৈরি করে জনমনে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ছবিটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে বুঝা যায় তা সম্পূর্ণ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এবং বাস্তবতা বিবর্জিত।