Image description

প্রশাসনের যথাযথ নজরদারির অভাবে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সুলতানা জাহান নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ। প্রতিটি প্রকল্প থেকে ঘুষ নিলেও সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরেই থাকছেন সরকারি এ কর্মকর্তা। কালীগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়নগুলোর প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর তদারকি করেন সুলতানা জাহান। 

অভিযোগ উঠেছে, এ তদারকির সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতিটি প্রকল্প থেকে হাতিয়ে নেন মোটা অঙ্কের টাকা।

 
টিআর, কাবিখা, কাবিটা, অতি দরিদ্রের জন্য কর্মসংস্থানসহ সব প্রকল্প থেকেই অফিস খরচ বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে তিনি।

 

সম্প্রতি কালীগঞ্জ উপজেলায় টিআর, কাবিটা, কাবিখা, কর্মসূচিসহ একাধিক প্রকল্প ঘুরে দেখা গেছে- অধিকাংশ প্রকল্পেই পূর্ণাঙ্গ কাজ করা হয়নি। আংশিকভাবে কাজ সমাপ্ত করা হয়েছে।

 

এসব প্রকল্পের প্রকল্প সভাপতিরা জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুলতানা জাহানকে বরাদ্দের টাকার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ টাকা দিতে হয়।

 
এ ছাড়া মাস্টাররোলেও খরচ করতে হয়। অনেক সময় মসজিদ, মন্দির, মাদরাসার বরাদ্দেও ছাড় দিতে চান না তিনি। ফলে উন্নয়নকাজ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না।  

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালীগঞ্জ উপজেলার একটি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও প্রকল্প সভাপতি বলেন, ‘পিআইও সুলতানার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়ার সাহস কারো নেই।

 
পিআইও অফিসে এখন ঘুষ বাণিজ্য প্রকাশ্যে হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন জানে প্রতিটি প্রকল্প থেকে অফিস খরচের নামে পিআইও অফিস টাকা নেয়। পিআইওসহ তার অফিসের সবাই এ ঘুষ-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। যেখানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নেন না, সেখানে আমাদের মতো ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করলেই বিপাকে পড়তে হবে।’

 

জেলা সচেতন সাগরিক সমাজের প্রতিনিধি বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত হোসেন বলেন বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরেও অনেক আমলরা এখনো একই স্টাইলে দুর্নীতি করে যাচ্ছে।

 
গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে এ ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত নজদারি করা প্রয়োজন।

 

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সুলতানা জাহান বলেন, ‘আমি সততার সঙ্গে কাজ করি। এগুলো শুধু শুধু বলা হচ্ছে। আমি সম্প্রতি হজ করেছি—এসব অপকর্ম করার প্রশ্নই আসে না।’

এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী দেদারুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। এ নিয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অনিয়ম-দুর্নীতির ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে।’