Image description
 

দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর যশোরের বেনাপোল দিয়ে আবারও ভারতীয় চাল আমদানি শুরু হয়েছে। মোট দুই চালানে ১৫ ট্রাকে মোট ৫২৫ মেট্রিক টন চাল আমদানি করা হয়েছে।

 

 

ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে রোববার সন্ধ্যায় ৬ ট্রাকে ২১০ মেট্রিক টন ও বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ৯ ট্রাকে ৩১৫ মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

 

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাজী মুসা করিম অ্যান্ড সন্স এ চাল আমদানি করে। অন্যদিকে ভারতীয় রপ্তানিকারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে মেসার্স লক্ষ্মী ট্রেডিং কোম্পানি এবং শর্মা এগ্রো লিমিটেড।

 

আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স হাজী মুসা করিম অ্যান্ড সন্সের সত্ত্বাধিকারী আব্দুস সামাদ বলেন, চালের বাজার দীর্ঘদিন ধরে অস্থির। সরকার আমদানির অনুমতি দেওয়ায় আমরা দ্রুত চাল এনেছি। আশা করছি বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমবে।

 

বেনাপোল আমদানি ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি হাজী মহাসিন মিলন বলেন, আমাদের লক্ষ্য ভোক্তার কাছে স্বস্তি পৌঁছে দেওয়া। তবে আমদানির প্রক্রিয়া সহজ হলে এবং শুল্ক ও কাগজপত্র ঝামেলা কমালে আরও বেশি চাল আনা সম্ভব হবে। বাজারে সরবরাহ যত বাড়বে, ততই দামের স্থিতিশীলতা আসবে।

 

যশোরের খুচরা চাল ব্যবসায়ী মো. ইসরাঈল মণ্ডল বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ৫-৭ টাকা বেড়ে গিয়েছিল। এতে সাধারণ ক্রেতাদের কষ্ট বেড়ে যায়। এখন আমদানিকৃত চাল বাজারে এলে কিছুটা হলেও দাম কমবে বলে আশা করছি।

 

বেনাপোলের পাইকারি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম বলেন, যত বেশি আমদানি হবে, বাজার তত দ্রুত স্থিতিশীল হবে। আমাদের ধারণা, নতুন চালের সরবরাহ বাড়লে পাইকারি বাজারে দাম ৩-৪ টাকা পর্যন্ত কমে যাবে। এতে সাধারণ মানুষ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে।

 

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক মো. শামীম হোসেন বলেন, দুই চালান ইতোমধ্যে বন্দরে খালাস হয়েছে। কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর দ্রুতই চাল বাজারে প্রবেশ করবে। আমদানি বাড়লে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে। আমদানিকারকরা নিয়মিতভাবে চাল আনতে থাকলে এ বন্দর দিয়ে বাণিজ্যের গতি আরও বাড়বে।

 

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত বছর (২০২৪ সালে) প্রায় ৪৫ হাজার মেট্রিক টন চাল বাংলাদেশে আমদানি হয়েছিল। তবে চলতি অর্থবছরের শুরুতে নীতিগত কারণে কয়েক মাস আমদানি বন্ধ ছিল। এর ফলে বাজারে চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং দামের ঊর্ধ্বগতি দেখা দেয়।

 

ব্যবসায়ীদের মতে, সরকার যদি নিয়মিত আমদানির অনুমতি দেয়, তবে এ বছরও চালের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে। এতে শুধু বাজার নিয়ন্ত্রণে আসবে না, একইসঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয়ের পরিমাণও বাড়বে।

 

বর্তমানে বাজারে সরু চাল কেজিপ্রতি ৬৫ থেকে ৭২ টাকা এবং মোটা চাল ৫২ থেকে ৫৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাইকারদের দাবি, নতুন চাল বাজারে প্রবেশ করলে দাম আরও ৩-৪ টাকা পর্যন্ত কমতে পারে। ভোক্তারা মনে করছেন, যদি এভাবে নিয়মিত আমদানি চলতে থাকে তবে বাজারে আর অস্থিরতা থাকবে না। বিশেষত নিম্নআয়ের মানুষরা এতে সবচেয়ে বেশি উপকার পাবেন।