Image description

জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়ায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মতামত জমা দিয়েছে ২৩টি  রাজনৈতিক দল। এখনো ৭টি দল তাদের মতামত জমা দেয়নি। মতামত জমা দেয়ার সময় শেষ হয়েছে। আর সময় বৃদ্ধি করা হয়নি বলে জানিয়েছে কমিশন। 
কমিশন সূত্র জানায়, জুলাই সনদের ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে গত ১৬ই আগস্ট চূড়ান্ত খসড়া ৩০টি দল ও জোটকে পাঠায় কমিশন। তাদের মতামত দিতে ২০শে আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়। তবে কয়েকটি দলের অনুরোধে আরও দু’দিন সময় বাড়ায় কমিশন। গতকাল পর্যন্ত ২৩টি দলের মতামত জমা দিয়েছে বলে জানায় ঐকমত্য কমিশন।

মতামত জমা দেয়া দলগুলো: লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, ১২ দলীয় জোট, গণফোরাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জাকের পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি।

মতামত জমা দেয়নি যে দলগুলো: নাগরিক ঐক্য, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি), রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এর আগে গত শনিবার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সনদের খসড়া প্রস্তাব পাঠায়। সনদের পটভূমিতে উল্লেখ করা হয়েছে- পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের ঘটনা এবং ২০১৮ সালের কোটা আন্দোলন। চূড়ান্ত খসড়ার প্রস্তাবের অঙ্গীকারনামায় বলা হয়েছে, জুলাই সনদের বিধান, প্রস্তাব ও সুপারিশ সাংবিধানিক ও আইনগতভাবে বলবৎ বলে গণ্য হবে। এ বিষয়ে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। এ ছাড়া যেসব সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য বলে বিবেচিত, সেগুলো জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই সরকারকে বাস্তবায়ন করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিশনের ভাষ্য অনুযায়ী, খসড়ার বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়নি কিছু দল। এসব ভিন্নমতের বিষয়গুলো নোট অব ডিসেন্ট আকারে সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় ৬৮ দিনের বৈঠকে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জুলাই সনদের চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করে কমিশন। তবে সংস্কার বাস্তবায়ন নিয়ে ভিন্নমত জানায় দলগুলো। জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দেয়ার পক্ষপাতী নয় বিএনপি। সনদ সম্পর্কে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না, এ অঙ্গীকারেও একমত নয় দলটি।

বিএনপি চায়, যেসব সাংবিধানিক সংস্কারে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো আগামী নির্বাচিত সংসদে বাস্তবায়ন করা হবে। অন্যদিকে বিএনপি’র বিপরীতে অবস্থান জামায়াতের। দলটি সংবিধানের উপরে সনদের প্রাধান্য চেয়েছে। সনদ সম্পর্কে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না, এ অঙ্গীকারেও সমর্থন করেছে দলটি। তবে কোন কোন সংস্কার প্রস্তাব নির্বাচনের আগে বাস্তবায়নযোগ্য, এ তালিকা ঐকমত্য কমিশনের কাছে চেয়েছে তারা।