
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি।
এজন্য সংসদীয় আসনের খসড়া; ভোটার তালিকার খসড়া ও নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন কার্যক্রমও এগিয়ে নিচ্ছে কমিশন। এ উপলক্ষে আগামী সপ্তাহে রোডম্যাপ প্রকাশ করবে ইসি। নির্বাচনিকাজের সময়ভিত্তিক বাস্তবায়নসূচি থাকবে এই রোডম্যাপে।
গতকাল নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন ইসি সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনিকাজের সময়ভিত্তিক বাস্তবায়নসূচি থাকবে এই রোডম্যাপে। এ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে নির্বাচনি রোডম্যাপ দিতে পারব।’ সংসদ নির্বাচনের পথ দৃশ্যমান করতে ছয় মাসের এই নির্বাচনি রোডম্যাপ বা কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করছে ইসি। ইতোমধ্যে নির্বাচনি রোডম্যাপের খসড়া প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের এবং পরের কার্যক্রমের ধারাবাহিক বর্ণনা থাকছে এই কর্মপরিকল্পনায়। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের জন্য এক মাস সময় রাখা হচ্ছে। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত ভোটার হালনাগাদের খসড়া তালিকা ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত হবে। এরপর আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবে তাদের ভোটার তালিকায় যুক্ত করে সম্পূরক ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে কমিশন। আগস্ট-সেপ্টেম্বরের মধ্যে নতুন দলের নিবন্ধন গেজেট প্রকাশ করার পরিকল্পনা নিয়ে ভোটের প্রস্তুতি এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একইভাবে নির্বাচনি আইন সংস্কার; ৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করা; নির্বাচনি প্রশিক্ষণ শুরু হবে ২৯ আগস্ট, চলবে ভোট গ্রহণের দুই-তিন দিন আগপর্যন্ত। এ ক্ষেত্রে শেষ মুহূর্তে হবে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ। নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সেপ্টেম্বর; অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা থাকছে রোডম্যাপে।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রোজার আগে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা এসেছে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছ থেকে। নির্বাচন কমিশনও বলছে, ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ভোটের আগে ৫০ থেকে ৬০ দিন হাতে রেখে ভোটের তফসিল দেবে। ২০০৭-০৮ সাল থেকে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কাজের অগ্রগতি তুলে ধরে রোডম্যাপ প্রকাশের রেওয়াজ চলে এসেছে। সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দেড় বছর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রোডম্যাপ দিয়েছিল তৎকালীন ইসি। বর্তমান ইসিও এ ধরাবাহিকতা বজায় রাখছে। ভোটার তালিকা, সীমানা নির্ধারণ, দল নিবন্ধন, নির্বাচনি আইনের সংস্কার, সরঞ্জাম কেনাকাটা, দল ও অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ, প্রশিক্ষণ, মুদ্রণ, আইনশৃঙ্খলা সভা, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের নিয়ে সভাসহ তফসিলের আগে-পরে প্রস্তুতির ফর্দ থাকবে এই রোডম্যাপে। বর্তমান ইসি ২০২৪ সালের নভেম্বরে যোগ দেওয়ার পর ২০২৫ সালের ডিসেম্বরকে ধরে একটা প্রাথমিক কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছিল। এবার ফেব্রুয়ারিতে ভোটের সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ হওয়ার পর নতুন সময় ধরে কর্মপরিকল্পনাটির পরিমার্জন চলছে। কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে ১৮ আগস্টে এ নিয়ে বৈঠক করার কথা রয়েছে। ইসির অনুমোদনের পর তা পুস্তিকা আকারে প্রকাশ হতে পারে।