
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের রেলপথ ব্লকেড করে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের অব্যাহত রয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উভয়প্রান্তে ৮টি ট্রেন আটকা পড়েছে। এর মধ্যে ৭টি যাত্রীবাহী একটি মালবাহী ট্রেন রয়েছে। টানা ৫ ঘণ্টা ধরে চলা রেলপথ ব্লকেড কর্মসূচিতে ঢাকা-উত্তরবঙ্গ রেলসড়কে ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে।
এর আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ৯টায় স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিপিপি অনুমোদনের দাবিতে উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় রেলপথ ব্লকেড করে বিক্ষোভ শুরু করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মোছা. হাসিনা খাতুন বলেন, রেলসড়ক টানা ৫ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকায় ইতোমধ্যে শিডিউল বিপর্যয় শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৮টি ট্রেন আটকা পড়েছে। এগুলো হলো, ঈশ্বরদীতে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিত্রা এক্সপ্রেস, ভাঙুড়া স্টেশনে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, শরৎনগর স্টেশনে চিলাহাটিগামী চিলাহাটি এক্সপ্রেস, লাহিড়ী মোহনপুরে ঢাকাগামী সিল্কসিটি এক্সপ্রেস, টাঙ্গাইলে দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস, জামতৈলে রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস ইব্রাহিমাবাদে রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস ও চাটমোহরে ঢাকাগামী তেলবাহী ট্রেন।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ধুমকেতু এক্সপ্রেস ২টার দিকে রাজশাহী এসে আবার ৪টায় পদ্মা হয়ে ছেড়ে যাবার কথা ছিল। অপরদিকে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ঢাকায় পৌঁছার পর পৌনে তিনটায় আবারও রাজশাহী অভিমুখে ছেড়ে আসার কথা। এ ছাড়াও রংপুর এক্সপ্রেস রংপুরে ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস কুড়িগ্রামে পৌঁছে আবারও ঢাকায় ফেরার কথা। কিন্তু এসব ট্রেন এখন পর্যন্ত বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ে আছে। ফলে ভয়াবহ সিডিউল বিপর্যয়ে পড়েছে ঢাকা-উত্তরাঞ্চল রেলসড়ক।
এদিকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ডিপিপি দ্রুত অনুমোদনের দাবিতে ১০ আগস্ট হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। সেদিন ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়ে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। এরপরও সরকারের কোনো পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাইনি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আট বছরেও ক্যাম্পাস নির্মিত হয়নি এটা দুর্ভাগ্যজনক। শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও কর্মচারী-কর্মকর্তাদের চরম ভোগান্তির মধ্য দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এভাবে আর চলতে পারে না। আমরা ক্যাম্পাস চাই। ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন ছাড়া আমরা ঘরে ফিরব না।
উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠার নয় বছরেও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্কের ডিপিপি অনুমোদন না হওয়ায় আন্দোলন করে আসছে শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও একাত্মতা প্রকাশ করেছে। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত একটানা কর্মসূচিতে মহাসড়ক অচল করে দেন শিক্ষার্থীরা। তখন সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করায় আন্দোলন স্থগিত করা হয়। এরপর ৬ মাসেও ডিপিপি অনুমোদন না হওয়ায় ২৬ জুলাই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের কর্মসূচি বয়কটের মধ্য দিয়ে আবার আন্দোলন শুরু হয়।