Image description

 আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম "জুলাই ঘোষণাপত্রে" উল্লিখিত প্রতিশ্রুতি ও আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গতকাল (মঙ্গলবার) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এই মন্তব্য করে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ৫ আগস্ট জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এক আনুষ্ঠানিক আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস "জুলাই অভ্যুত্থান"-এর এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ওই ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এতে তিনি বলেন, "আইনের শাসন, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতেই জনগণ এই পরিবর্তন চেয়েছিল।" তবে অ্যামনেস্টি মনে করে, সরকারের বিগত এক বছরের কার্যক্রমে এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লক্ষণ স্পষ্ট নয়।

বিবৃতিতে জাতিসংঘের একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দলটির নেতাকর্মী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সুপরিকল্পিতভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তখন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ব্যাপক ধরপাকড় ও সহিংস দমন-পীড়নের ঘটনা ঘটে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, শুধু "জুলাই অভ্যুত্থান" চলাকালে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হন।

এই ঘটনার জবাবদিহির অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে বিচার শুরু হয়েছে। ৩ আগস্ট তার অনুপস্থিতিতে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

"জুলাই ঘোষণাপত্রে জনগণের মূল দাবির মধ্যে ছিল— নিপীড়ন, সহিংসতা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের লুটপাটের বিচারের নিশ্চয়তা," উল্লেখ করে অ্যামনেস্টি বলেছে, এখনো পর্যন্ত সে প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। বিশেষ করে, মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়ায় অগ্রগতি খুবই সীমিত।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল আরও জানিয়েছে, সংস্থাটি ইতোমধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত সহিংসতার প্রমাণাদি আন্তর্জাতিক আদালতে উপস্থাপনের আহ্বান জানিয়েছে, যেন আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনা যায়।

সংস্থাটি বাংলাদেশের বর্তমান সরকারকে শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করা এবং বিচারবহির্ভূত গ্রেপ্তার ও মৃত্যুদণ্ড বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও স্বেচ্ছাচারী গ্রেপ্তার ও মৌলিক অধিকারের সীমাবদ্ধতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

শীর্ষনিউজ