
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এ. এফ. রহমান হলের ডাইনিং, ক্যান্টিন ও একটি খাবার দোকানের ফ্রিজ থেকে কয়েকদিনের পচা-বাসি খাবার উদ্ধার করে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেল ২টা ৩০ মিনিটের দিকে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে দোকান ও ক্যান্টিনে তালা দেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এক কর্মচারী হাত না ধুয়ে খাবার পরিবেশন করছিলেন। প্রতিবাদ জানালে ক্যান্টিন মালিক বলেন, ‘খাইলে খাইবেন, না খাইলে খাইবেন না।’ পরে শিক্ষার্থীরা ডাইনিং, ক্যান্টিন ও দোকানের ফ্রিজ খুঁজে কয়েকদিনের পঁচা-বাসি খাবার বের করে আন্দোলন করেন।
রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা আজকে হলের ডাইনিং, ক্যান্টিন ও আলম ভাইয়ের দোকানের ফ্রিজ থেকে কয়েকদিন আগের বাসি পঁচা খাবার পেয়েছি। প্রায় সময়ই তারা আমাদের আগের দিনের বাড়তি থাকা খাবার খাওয়ায়। পরোটা বানানোর যে আটা সেটা ২-৩ দিনেরটা একসাথে করে রাখে। এগুলো খেয়ে আমরা প্রতিনিয়ত অসুস্থ হচ্ছি। আমরা এর সমাধান চায়। প্রশাসনের কাছে ১৩ দফা দাবি জানিয়েছি।’
দাবিগুলো হলো- পরিচ্ছন্নতা ও হাইজিন নিশ্চিত করা, ফিল্টারসহ সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, মালিকদের অব্যহতি দেওয়া, ক্যাফেটেরিয়া সম্পূর্ণ রং করা এবং ফ্যান লাগানো, বাচ্চা ছেলেদের কাজে না রাখা, নতুন টেবিল চেয়ার দেওয়া, নিয়মিত পরিচর্যা করা, চারপাশের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা, কর্মচারীদের আচরণবিধি ঠিক করা, দুইটি নতুন মুদি দোকান ও খাবার দোকান স্থাপন করা, পুরাতন থালাবাসন পরিবর্তন করা, পর্যাপ্ত লাইটিং রাখা এবং সবগুলো দোকানে পরিচ্ছন্ন বেসিন এর ব্যবস্থা করা।
রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী সাখাওয়াত হোসেন মিলন বলেন, ‘এখানে খাবারের এতো বাজে অবস্থা তা ভাষায় বলার মতো না। আমি নিজে এই খাবার খেয়ে মাসখানেক আগে অসুস্থ ছিলাম। খাবার যদি একটু স্বাস্থ্যসম্মত না পাই কীভাবে বেঁচে থাকবো? পড়ালেখা কীভাবে চালাবো?’
ঘটনাস্থলে থাকা হাউস টিউটর মোরশেদুল হক বলেন, ‘সহকারী প্রক্টর কোরবান আলী ও নুরুল হামিদ কানন পরিদর্শনে পঁচা খিচুড়ি ও ডিম পান। প্রভোস্ট এর ব্যবস্থা না নিলে আমি হলে থাকব না। পরে তিনি দোকান ও ক্যান্টিন বন্ধ ঘোষণা করে।’
এবিষয়ে সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদ কানন বলেন, ‘আমরা এসে খাবার এর বাজে অবস্থা দেখেছি এবং শিক্ষার্থীরা যে খাবারের এত বাজে অবস্থা থাকার পরও মব সৃষ্টি করেনি সেটির ব্যাপারে আমি সাধুবাদ জানাই। কারণ আগের সময় দেখেছি খাবার এই বাজে অবস্থার কারণে মব হয়েছিল। আমরা হল কর্তৃপক্ষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবো এবং এই দোকান ও ক্যান্টিন বন্ধ থাকবে।’