Image description

২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় সংসদ ভবনে শুরু হচ্ছে বড় ধরনের সংস্কার ও আধুনিকায়নের কার্যক্রম। ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক ছাত্র-জনতা সংসদ ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে। এ সময় সংসদের ভেতরের প্রতিটি স্থাপনায় চালানো হয় ভাঙচুর। ঘটে চুরির মতো ঘটনাও। বর্তমানে সংসদের ভেতরের কার্যক্রম চালানোর মতো কোনো পরিবেশ নেই, অক্ষত নেই সংসদের চেয়ার, কার্পেটসহ আসবাবপত্র। ঘটনার পর প্রায় অচল হয়ে পড়া ভবনটিকে আবারো সচল ও প্রযুক্তিনির্ভর কাঠামোয় ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট সংসদ সচিবালয় ও গণপূর্ত অধিদপ্তর। প্রাথমিকভাবে ৩০০ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। সংস্কার কাজ শুরু হওয়ার কথা এবং সময়সীমা ধরা হয়েছে ডিসেম্বর-২০২৫। লক্ষ্য একটাই- ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগেই সংসদের পূর্ণাঙ্গ কার্যকারিতা নিশ্চিত করা।

গত ৫ই আগস্ট তছনছ করা হয় সংসদ ভবনের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, হুইপ, সংসদীয় কমিটির দপ্তর, আইটি সেন্টার ও ভিআইপি কক্ষসমূহ। ধ্বংস হয়ে যায় এসি, কম্পিউটার, ই-ভোটিং প্রযুক্তি, সম্প্রচার ব্যবস্থা ও টেলিকম সংযোগ। সংসদের অধীন এমপি হোস্টেল, কর্মকর্তা-কর্মচারীর আবাসিক ভবনেও বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুর চালিয়েছে। লুট হয়েছে আসবাব, ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, গুরুত্বপূর্ণ ফাইল।

সংস্কারের আওতায় থাকবে: কাঠামোগত মেরামত, আসবাবপত্র ও কার্পেট প্রতিস্থাপন, সাউন্ড প্রুফিং ও সম্প্রচার ব্যবস্থা, নিরাপত্তায় আধুনিকায়ন, ভোটিং সফটওয়্যার ও আইটি পুনঃস্থাপন। 
সংসদ সচিবালয় ও গণপূর্ত বিভাগের তথ্যমতে, ভবন ও সংশ্লিষ্ট আবাসিক এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সংসদের নিজস্ব ক্ষতি ৫০ কোটি টাকার মতো। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আইটি বিভাগে।
গণপূর্ত বিভাগের কাঠ ও আসবাব শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজেদুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, সংসদের সংস্কারে এখনো বাজেট পাইনি। এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনাও পাইনি। বাজেট আর নির্দেশনা পেলে আমরা প্রস্তুত আছি খুব দ্রুতই কাজ শুরু করে দেবো। 

সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো জানিয়েছে, নতুন করে বসানো হবে সাইমুলটেনিয়াস ইন্টারপ্রেটেশন সিস্টেম (ঝওঝ), এক্সেস কন্ট্রোল, আর্চওয়ে, ব্যাগেজ স্ক্যানার, সিসিটিভি ও নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক। এসব ক্রয়ের জন্য তালিকা তৈরি করে জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদন চাওয়া হয়েছে।

উচ্চকক্ষের আভাস, এখনো পরিকল্পনায় নয়: সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ধারাবাহিক সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে উচ্চকক্ষ গঠনের বিষয়ে। কিন্তু উচ্চকক্ষের নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে এখনো জটিলতা কাটেনি। রাজনৈতিকভাবে উচ্চকক্ষ (সিনেট বা দ্বিতীয় চেম্বার) চালুর দাবি উঠলেও এখনই আলাদা ভবন নির্মাণ হচ্ছে না। 
সংসদের সংস্কার কার্যক্রমের বিষয়ে সংসদ সচিব (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামাল উদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, এ বিষয় আমাদের বিভাগের কাজ না, এটা ইঞ্জিনিয়ার সেকশনের কাজ।