
জুলাই গণ অভ্যুত্থানে নিহত এক নারীসহ ছয়জনের পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি। ফলে এক বছর ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে তাদের লাশ পড়ে ছিল। দীর্ঘ সময়েও তাদের খোঁজে কেউ না আসায় বেওয়ারিশ হিসেবে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়। গতকাল দুপুরে হস্তান্তরের পর লাশগুলো ঢাকার জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
নিহত ছয় মৃতদেহের মধ্যে পল্টন এলাকা থেকে একজনের, যাত্রাবাড়ী থানা এলাকা থেকে তিনজনের এবং ঢামেক হাসপাতাল থেকে এক নারীসহ দুই মৃতদেহ উদ্ধার হয়। পরে তাদের শাহবাগ থানা পুলিশের মাধ্যমে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি এবং ঢামেক মর্গে ময়নাতদন্তের পর মর্গের মরচুয়ারিতে রাখা হয়। পাশাপাশি তাদের ডিএনএ প্রোফাইল নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়।
শাহবাগ থানার ওসি মোহাম্মদ খালিদ মনসুর বলেন, আদালতের নির্দেশে, ঢামেক ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী গোলাম মোখলেছুর রহমান, যুগ্ম-কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন ও রমনা বিভাগের ডিসি মো. মাসুদ আলমের উপস্থিতিতে আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে অজ্ঞাত ছয় মৃতদেহ আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে হস্তান্তর করা হয়।
জানা গেছে, নিখোঁজের খোঁজে অনেকেই এসেছিলেন, কিন্তু মৃতদেহ দেখে শনাক্ত করতে পারেননি। মৃতদেহগুলোর ডিএনএ সংরক্ষণ করা রয়েছে, যেন ভবিষ্যতে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি ঢামেক মর্গে সংরক্ষিত ছয়টি বেওয়ারিশ মৃতদেহের তথ্য সামনে আনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই গণ অভ্যুত্থানবিষয়ক বিশেষ সেল। তখন সেল থেকে জানানো হয়, অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ এবং একজন নারীর মৃতদেহ রয়েছে। মৃতদেহগুলোর ময়নাতদন্তে পাঁচজনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে ‘আঘাতজনিত মৃত্যু’। আর একজনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে ‘ওপর থেকে নিচে পড়ে মৃত্যু’। মৃতদেহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. কাজী গোলাম মোখলেছুর রহমান বলেন, পরিচয় শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। কিন্তু এসব সত্ত্বেও তাদের পরিচয় অজ্ঞাতই থেকে গেছে। একটি মৃতদেহে গুলি এবং বাকি পাঁচটিতে ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এর মধ্যে নারীর বয়স (৩২)। বাকিগুলো পুরুষের। তাদের বয়স যথাক্রমে ৩০, ২৫, ২০, ২২ ও ২৫ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের দাফন সেবা অফিসার মো. কামরুল আহমেদ বলেন, জুরাইন কবরস্থানে জুলাই গণ অভ্যুত্থানে নিহত ছয়টি মৃতদেহ দাফন করা হয়েছে। শ্যামপুর থানার ওসি মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামও দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।