Image description

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে কঠোর মন্তব্য করেছেন। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি শেখ হাসিনাকে ‘নৃশংসতার নির্দেশদাতা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। একই স্ট্যাটাসে তিনি স্বীকার করেন, চব্বিশের ‘নৃশংসতা’র সঙ্গে একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যার তুলনা করা তাঁর উচিত হয়নি। এজন্য তিনি দুঃখপ্রকাশ করেছেন।

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “শেখ হাসিনার নৃশংসতা অবিশ্বাস্য। লাশ ও আহত মানুষকে আগুনে পোড়ানো, নির্বিচারে নারী-কিশোর-শিশু হত্যা, হেলিকপ্টার দিয়ে গুলি করে বেসামরিক মানুষ মারা, মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর তরুণকে গুলি করে মারা, হাসপাতালে চিকিৎসা না দিয়ে হত্যা করার নির্দেশদাতা ছিলেন শেখ হাসিনা।” তিনি আরও বলেন, “যুদ্ধের ময়দানেও এসব কর্মকাণ্ড গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।”

স্ট্যাটাসে ভুল স্বীকার করে দুঃখপ্রকাশও করেছেন তিনি। স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “তাই বলে শেখ হাসিনার নৃশংসতার সাথে একাত্তরে বাংলাদেশের মানুষের উপর পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতার তুলনা করা ঠিক হয়নি আমার। দুটোই জঘন্যতম অপরাধ। কিন্তু যারা মনে করেছেন আমি একাত্তরের গণহত্যাকে ছোট করে দেখেছি, তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।”

এর আগে আজ  রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘জুলাই গণহত্যার বিচার: আলোচনা ও তথ্যচিত্র প্রদর্শন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে আসিফ নজরুল বলেন, ‘শেখ হাসিনা এবং তাঁর দোসররা যে অপরাধ বাংলাদেশে করেছে, আমি সরি, আমার মনে হয়, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী এত জঘন্য অপরাধ করেনি। মৃতদেহ পুড়িয়ে ফেলা, আহত মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা। আন আর্মড (নিরস্ত্র) মানুষ আহত হয়ে যাচ্ছে যখন, তখন গুলি করে মেরে ফেলা। আপনারা বলতে পারেন, ২৫ মার্চে কালরাতে হয়েছে। অবশ্যই ২৫ মার্চে কালরাতে ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু একদম ওটা তো অন্য দেশের বাহিনী। আমরা স্বাধীনতার ঘোষণা করেছি তারপর।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘৭১ সালে ডেডবডি পুড়িয়ে ফেলেছে এমন ফুটেজ আমি দেখি নাই। বা ৭১ সালে একজন গুলি খেয়েছে, তাকে ধরে পিছু নিয়ে যাচ্ছে তার বন্ধু, সেই অবস্থায় তাকে গুলি করেছে, এ রকম কোনো ফুটেজ বা এ রকম কোনো বর্ণনা আমি কোনো মুক্তিযোদ্ধার বর্ণনায় পড়িনি। অন্য রকম নৃশংসতা থাকতে পারে, কিন্তু এ রকম নৃশংসতা পড়িনি।’