Image description

যশোরে দেনমোহর নিয়ে বিরোধে ভেঙে যায় একটি বিয়ের আলোচনা। কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি ঘটনা। বরং সেই বিয়ে ভেঙে যাওয়ার জের ধরে শুরু হয় প্রতিপক্ষের ‘প্রতিশোধমূলক’ পদক্ষেপ-যুবককে জড়িয়ে দেয়া হয় একের পর এক হয়রানিমূলক চারটি মামলায়। ফলস্বরূপ, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সেই যুবক ও তার পরিবার এখন আইনি লড়াইয়ে জর্জরিত।

ঘটনার সূত্রপাত প্রায় এক বছর আগে। শহরের পূর্ববারান্দী মোল্লাপাড়া ঢাকা রোড এলাকার লোকমান হোসেনের ছেলে তামিমের সঙ্গে একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের মেয়ের পারিবারিকভাবে বিয়ের আলোচনা চলছিল। এসময় দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের দিনও নির্ধারিত হয়। কিন্তু দেনমোহর হিসেবে ৭৫ লাখ টাকা দাবি করে কনেপক্ষ। বরপক্ষ এই ‘অযৌক্তিক’ দাবি প্রত্যাখ্যান করে।

এরপরই বেরিয়ে আসে কনের বিরুদ্ধে একাধিক ছেলের সঙ্গে ‘অনৈতিক সম্পর্কের’ অভিযোগ। এমনকি একটি ছেলের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি নাকি ছেলেপক্ষের হাতে পৌঁছে যায়। এতে বিয়ে বাতিল হয়ে যায়।

রোববার (২৭ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করে যশোর শহরের পূর্ববারান্দী মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা লোকমান হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লোকমান হোসেন দাবি করেন, ‘প্রায় এক বছর আগে একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের মেয়ের সঙ্গে পারিবারিকভাবে আমার ছেলে তামিমের বিয়ের আলোচনা চলছিল। এসময় তাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে বিয়ের দিন নির্ধারিত হওয়ার পর আনোয়ার হোসেন বিয়ের কাবিন হিসেবে ৭৫ লাখ টাকা দাবি করেন, যা অযৌক্তিক হওয়ায় আমরা আপত্তি করি। আমরা জানতে পারি মেয়ের সঙ্গে একাধিক ছেলের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি একটি ছেলের সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি আমাদের কাছে পাঠানো হয়। এ অবস্থা বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর আমার ছেলে তামিমকে ঘিরে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে আনোয়ার হোসেন, তার মেয়ে ও ভাই দেলোয়ার হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চারজন। তারা মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। যা সম্পূর্ণ কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন। পুলিশ প্রভাবিত হয়ে কোন রকম তদন্ত ছাড়াই সেসব মামলা রেকর্ড করেছে। যার ফলে আমার পরিবার চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে।

মামলাবাজ আনোয়ার হোসেন একদিকে পুলিশকে ম্যানেজ করে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানি করছে। অন্যদিকে বিভিন্ন পত্রিকায় মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য সরবরাহ করে আমার পরিবার ও আমার ছেলের সম্মানহানি ও সামাজিকভাবে হেয় করছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আমার ছেলে আদালতে দুটি মামলা করেছে।

লোকমান হোসেন আরও দাবি করেন, মীমাংসার নাম করে আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে নাটক সাজিয়ে মেয়ে ও তার ভাই দেলোয়ার হোসেনকে দিয়ে দুটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ কর্মকর্তা আত্মীয়ের প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত ছাড়াই ওই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। তারা আদালতে আরও দুটি মিথ্যা অভিযোগে মামলা করেছে। মিথ্যা ও কাল্পনিক সাজানো অভিযোগে দায়ের করা চারটি মামলা নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি। পাশাপাশি আমাদের পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করছি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন লোকমান হোসেনের চাচা সোহরাব হোসেন ও আকিকুর রহমান।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে একই এলাকার আনোয়ার হোসেন দাবি করেন, ‘লোকমান হোসেনের সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বরং লোকমান ও তার পরিবারের লোকজনই দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বিরক্ত করছে। তাদের বিরূপ আচরণের কারণেই আমি আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছি।’