Image description
অস্বাভাবিক ব্যয় প্রস্তাব

জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় গতকাল ৮ হাজার ১৪৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় সংবলিত ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে অনুমোদন পায়নি আলোচিত ‘জুলাই শহীদদের আবাসন প্রকল্প’। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এসব তথ্য জানান। 

জুলাই শহীদদের আবাসন প্রকল্প অনুমোদন না পাওয়া প্রসঙ্গে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্পটি ভালো উদ্যোগ বলে আমরা মনে করেছিলাম, কিন্তু আমরা গ্রহণ করিনি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, কাগজপত্রগুলো দেখে আমাদের মনে হয়েছে, টেন্ডারে যাওয়ার আগে যথাযথভাবে খরচের মূল্যায়ন হওয়া উচিত। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে এই পরিবারগুলোর জন্য বিভিন্ন সাহায্য আসতে থাকলে কোথায় ফাঁক থাকছে আর কোথায় এক হয়ে যাচ্ছে-এটা বোঝা যাচ্ছে না। কাজেই আমরা মনে করছি, এই প্রকল্প এবং আরও প্রকল্প আছে। তাছাড়া ওইসব পরিবারের জন্য ভাতার যে ব্যবস্থা আছে। সবগুলোকে এক জায়গায় এনে সমন্বয় করা উচিত। তিনি বলেন, আবাসিক সুবিধা দিতে গেলে উত্তরাধিকারীর বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এ ছাড়া শুধু ঢাকার মিরপুরেই কেন? অনেকে তো গ্রামাঞ্চলে বা অন্য শহরে থাকে। পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, আমরা আরও পরিকল্পিতভাবে এগোতে চাই। এদিকে পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পের বিভিন্ন খাতে অস্বাভাবিক ব্যয় ধরা হয়েছে। এজন্য প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পায়নি। 

ওদিকে একনেক সভায় ১২টি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। সেগুলো হলো-গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ (২য় সংশোধিত ৪র্থ বার বৃদ্ধি) প্রকল্প। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২০টি (১২টি নতুন ও আটটি ফায়ার স্টেশন পুনঃনির্মাণ) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন’ এবং ‘বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য লজিস্টিকস ও ফ্রিট মেইনটেন্যান্স ফ্যাসিলিটিস গড়ে তোলা (প্রস্তাবিত ২য় সংশোধিন) প্রকল্প। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘গ্রামীণ স্যানিটেশন প্রকল্প’ এবং ‘বহদ্দারহাট বাড়াইপাড়া হতে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত খাল খনন’ (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্বাসন প্রকল্প। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘মিরপুর সেনানিবাসে ডিএসসিএসসি’র অফিসার্স মেস ও বিওকিউ নির্মাণ’ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়ন’ প্রকল্প। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘উপজেলা পর্যায়ে মহিলাদের জন্য আয়বর্ধক (আইজিএ) প্রশিক্ষণ (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের জাদুঘর ভবন সম্প্রসারণ এবং অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ’ (১ম সংশোধিত ৪র্থ বার বৃদ্ধি) প্রকল্প। কৃষি মন্ত্রণালয়ের ‘কন্দাল ফসল গবেষণা জোরদারকরণ প্রকল্প। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘স্মার্ট প্রি-পেমেন্ট মিটারিং প্রজেক্ট ইন ডিস্ট্রিবিউশন জোনস অফ বিপিডিবি (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প। এ ছাড়া সভায় পরিকল্পনা উপদেষ্টা কর্তৃক ইতিমধ্যে অনুমোদিত ১৮টি প্রকল্প সম্পর্কে একনেক সদস্যদের অবহিত করা হয়।