
নাটোরে জমি-সংক্রান্ত পুরোনো শত্রুতার জেরে নির্মম হামলার শিকার হয়েছিলেন হালিমা ও শাহানাজ নামে দুই নারী। দুর্বৃত্তরা তাঁদের উপর চালায় অমানবিক নির্যাতন—গরম পানি ও মরিচ গুঁড়া মিশিয়ে ঢেলে দেওয়া হয় তাঁদের শরীরে, মাথায় আঘাত করে করা হয় রক্তাক্ত। এই নৃশংস ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এক উজ্জ্বল মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
নির্যাতনের শিকার হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পৌঁছানো শাহানাজ বেগমকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে গেলে চিকিৎসা পাওয়া নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন স্বজনরা। সেই মুহূর্তেই আশার আলো হয়ে পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনী প্রধানের সরাসরি নির্দেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় শাহানাজকে ভর্তি করা হয় বগুড়ার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ)-এ। সেখানে তাঁর চলে দীর্ঘ সময়ের চিকিৎসা ও মানসিক পুনর্বাসনের কার্যক্রম। অবশেষে এক মাসেরও বেশি সময় পর, ২৪ জুলাই, সুস্থ হয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন শাহানাজ বেগম।
শাহানাজের পরিবার চোখের জল ধরে রাখতে না পেরে বলেন, ‘সিএমএইচ না পেলে আমরা হয়তো শাহানাজকে আর ফিরে পেতাম না। সেনাবাহিনীর প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।’ তাঁরা আরো বলেন, ‘রাষ্ট্র যখন এমনভাবে একজন নাগরিকের পাশে দাঁড়ায়, তখনই আমাদের বিশ্বাস হয়—এ দেশ এখনও মানুষের, মানবিকতার।’
নাটোর জেলার পুলিশ সুপার আমজাদ হোসাইন জানান, ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনীর সহায়তায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তদন্ত সুষ্ঠুভাবে চলছে।’
এই ঘটনা শুধু একটি নারীর জীবনের রক্ষা নয়—এ যেন রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব, মানবিকতা ও আইনের শাসনের মিলিত প্রতিফলন। এক ভয়াবহ ঘটনাকে ঘিরে জন্ম হয়েছে আশার নতুন আলো।