
মেধাবী ছাত্র সায়ান ইউসুফ (১৪)। স্বপ্ন ছিল বিদেশে গিয়ে পড়ালেখার। কিন্তু একটি দুর্ঘটনায় জীবনের আলোই নিভে গেল তার। গত সোমবার রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ হয়ে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় সে। তার মৃত্যুতে গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম চলছে।
মঙ্গলবার তার জানাজা শেষে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নের একই গ্রামের পালের বাড়িতে দাদার কবরের পাশে দাফন করা হয়। সায়ান মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
তার বাবা এএফএম ইউসুফ মাইলস্টোন কলেজ শাখার রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও মা শামীমা শাম্মী একই স্কুল শাখার রসায়নের শিক্ষক। তারা উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে ভাড়া থাকত। তার বোন পারিশা একই প্রতিষ্ঠানে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
সায়ানের চাচা মিজানুর রহমান বলেন, সে মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। প্রতি বছর ঈদে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসত। গত ঈদেও এসেছে। কিন্তু আর যে তার আশা হবে না। একেবারে লাশ হয়ে এসেছে।
তিনি আরো বলেন, বিমান বিধ্বস্তের পরপরই সায়ান অগ্নিদগ্ধ হয়ে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে আসে। পরে তাকে তার বাবা-মা দেখতে পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাতে মারা যায়।
স্থানীয়রা জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন ভিডিও প্রকাশ হয়, তখন আমরা দেখতে পাই প্রথমেই সায়ান অগ্নিদগ্ধ হয়ে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে আসছে। এটি এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। আমরা সঠিক তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
নাতির মৃত্যুসংবাদের পর সায়ানের দাদি কান্নায় ভেঙে পড়েন, বারবার দাদু ভাই, দাদু ভাই বলে জ্ঞান হারাচ্ছেন। অন্যদিকে তার বাবা কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি সাংবাদিকদের চলে যেতে বলেন।
একই ঘটনায় সদর উপজেলার পার্বতীনগর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের রহিম বখশ হাজী বাড়ির আব্দুস সামাদের ছেলে আফনান ফায়াজও মারা যায়। তাকে গতকাল সকালে ঢাকায় দাফন করা হয়েছে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। আফনানও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।