
পুরান ঢাকার নিমতলী ও চুড়িহাট্টার স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সেই বীভৎস দৃশ্য মনে পড়লেই এখনো ভারী হয়ে উঠে প্রতিটি মানুষের বুক। এমন লোমহর্ষক ঘটনায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিলেন ১৯৫ জন। নিকটজনের সামনেই তাদের অনেকে পুড়ে অঙ্গার হয়েছেন। লাশ দেখে চেনার উপায় ছিল না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে শনাক্ত হয়। আবার অগ্নিদগ্ধ হয়ে স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব জীবন-যাপন করছেন কেউ কেউ। এমন দুটি ভয়ংকর ঘটনার পর অন্যান্য দুর্ঘটনার মতোই দৌড়াদৌড়ি-হুড়োহুড়ি পড়েছিল সরকারসংশ্লিষ্টদের। গঠন করা হয় একের পর এক তদন্ত কমিটি। রাসায়নিক গুদাম স্থানান্তরসহ দেওয়া হয় গুচ্ছ গুচ্ছ সুপারিশ। এরই মধ্যে নিমতলী ঘটনায় ১৫ বছর, আর ৬ বছর কেটে গেছে চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের। কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশের একটিও। সরানো হয়নি গুদামগুলো। কবে স্থানান্তর হবে-তাও বলতে পারেন না দায়িত্বপ্রাপ্তরা। কার্যকর অর্থে তৎপরতা নেই তাদের। এ সুযোগে আগের মতোই পুরোদমে বেচাকেনা চলছে দাহ্য কেমিক্যালের। চরম অগ্নিঝুঁকির মধ্যে বাস করছেন বৃহত্তর পুরান ঢাকার প্রায় ৫০ লাখ বাসিন্দা। আলোচ্য সময়ের মধ্যেই থেমে থেমে ঘটছে ছোট-মাঝারি অসংখ্য অগ্নিদুর্ঘটনা। হতাহতও হচ্ছেন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক। সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি তো আছেই। এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয়দের প্রচণ্ড ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ-আর কত লাশ দরকার। আরেকটি বড় দুর্ঘটনার জন্য কী অপেক্ষা করতে হবে। তাহলে কী টনক নড়বে সরকারের।
এদিকে সরকারের সংশ্লিষ্টরা জানান, নানা সমালোচনা ও পেশাজীবীদের চাপে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে সরকার মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে কেমিক্যাল (রাসায়নিক) ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। ইতোমধ্যে ৭ বছর পার হলেও প্রকল্পের কাজের কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি হয়নি। এই প্রকল্পের মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হলেও কাজ শেষ হচ্ছে না। আগামী বছরে শেষ হবে কিনা-তা নিয়েও আছে অনিশ্চিয়তা।
তাদের আরও অভিমত-পুরান ঢাকাকে বাসযোগ্য করতে কেমিক্যাল গুদাম সরানোর পাশাপাশি নতুন রূপে গড়ে তোলারও পরিকল্পনা করেছে সরকার। কিন্তু, তা পরিকল্পনাতেই সীমাবদ্ধ হয়ে রয়েছে। আদৌ তা আলোর মুখ দেখবে কিনা তা অজানা। হাজারীবাগ, বংশালসহ কয়েকটি এলাকায় ভূমি পুনঃউন্নয়ন করার বিষয়ে আলোচনা হলেও তা বাস্তবে রূপ পায়নি। এ প্রসঙ্গে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, পুরাতন এলাকাকে নতুনভাবে গড়ে তোলার চিন্তা বাংলাদেশে নতুন। এ কারণে জনগণ বুঝতে চাচ্ছে না। তবে অনেক মতবিনিময় করার পর আগ্রহীর সংখ্যা বেড়েছে। হাজারীবাগের ট্যানারি এলাকার পুনঃউন্নয়নের বিষয়ে ভূমি মালিকরা নিজেরা তা করার কথা ভাবছেন। রাজউক তাদের কারিগরি সহায়তা দেবে।
সম্প্রতি পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বহাল তবিয়তে আছে পুরান ঢাকার রাসায়নিক ব্যবসা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) আওতাভুক্ত এলাকা হওয়ায় সরকারের নির্দেশনা মেনে রাসায়নিক ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন বন্ধ রেখেছে সংস্থাটি। যদিও সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে-পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থাগুলো। অন্যান্য সংস্থা সেবা দিলেও ডিএসসিসি কেন ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করছে না, সেজন্য তাদের ওপর চাপ দিচ্ছে ব্যবসায়ী মহল এবং ব্যবসায়ীদের সংগঠনগুলো। তবুও সিটি করপোরেশন নিজেদের অবস্থানে অনড় রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব নয় বলে ব্যবসায়ীরা কেরানীগঞ্জ ও সাভার থেকে ট্রেড লাইসেন্স করছেন। আর ট্রেড লাইসেন্স করার শর্ত পূরণ করতে কৌশলে সেসব এলাকায় রাসায়নিক কারখানা-গুদাম তৈরি করছেন। কিন্তু তাদের মূল ব্যবসা থাকছে পুরান ঢাকাতেই।
সরেজমিন দেখা গেছে, পুরান ঢাকার চকবাজার, নিমতলী, চুড়িহাট্টা, বাবুবাজার, সোয়ারিঘাট, মৌলভীবাজার, ইসলামবাগ এলাকায় নির্বিঘ্নে চলছে রাসায়নিক বেচাকেনা। সড়কের পাশে ড্রামে সারি সারি সাজানো রয়েছে কেমিক্যাল। কেউ ঠেলাগাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি দিন-রাত ট্রাক থেকে রাসায়নিকগুলো নামাতে-উঠাতে দেখা যায়।
তবে নিমতলী এলাকার কেমিক্যাল গুদাম আগের তুলনায় কম। বিভিন্ন সময় ওই এলাকায় প্রশাসনের তদারকি হওয়ায় তারা অন্যত্র গুদাম সরিয়ে নিয়েছে। এসব গুদামের কিছু গেছে কেরানীগঞ্জে। আবার কিছু গেছে সাভারে। স্বল্পপরিসরে পুরান ঢাকাতেও রয়েছে। তবে চুড়িহাট্টার অবস্থা আগের মতোই। ট্রেড লাইসেন্স না থাকলেও তারা অবৈধভাবে দাহ্য কেমিক্যাল ব্যবসা অব্যাহত রেখেছেন।
ইসলাম বাগের বাসিন্দা ও প্লাস্টিক কারখানার কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক যুগান্তরকে বলেন, পুরান ঢাকা থেকে দাহ্য পদার্থের গুদাম (রাসায়নিক) সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সরকারের নির্দেশনা এবং উদ্যোগ থাকলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। প্রতিবছর এসব রাসায়নিক গুদাম থেকে অগ্নিদুর্ঘটনা ঘটছে। ছোট-বড় এসব দুর্ঘটনায় অনেক হতাহত এবং সম্পদ ধ্বংস হচ্ছে। তবুও সরকার সংশ্লিষ্টদের সেসব বিষয়ে টনক নড়ছে না। বিভিন্ন সময়ে যেসব কমিটি গঠন এবং সুপারিশ এসেছে তা থেকে কাঙ্ক্ষিত সুফল মেলেনি।
মৌলভী বাজারের বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, পুরান ঢাকা আর অগ্নিদুর্ঘটনা যেন একে অন্যের সঙ্গী হয়ে আছে। রীতিমতো বোমার ওপর বসবাস করছে পুরান ঢাকার মানুষ। নিমতলী, চুড়িহাট্টাসহ বিভিন্ন সময়ের অগ্নিদুর্ঘটনা তা বারবার স্মরণ করিয়ে দিলেও তা থেকে শিক্ষা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্টরা।
পুরান ঢাকার নিহত ময়ান আলীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২১ সালে পুরান ঢাকার সোয়ারিঘাট এলাকায় একটি জুতার কারখানায় ৫ জন মারা যান। তাদের একজন ছিলেন কিশোরগঞ্জের ময়ান আলী। তার ছোট ভাই রনি যুগান্তরকে বলেন, তিনিও তার ভাইয়ের সঙ্গে ওই কারখানায় কাজ করতেন। অগ্নিকাণ্ডের দিন পারিবারিক সমস্যার কারণে গ্রামের বাড়িতে থাকায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
উপার্জনক্ষম ভাইয়ের মৃত্যুর কারণে তার পরিবার মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ে গেছে। স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েকে রেখে গেছেন তিনি। অভাব-অনটনে অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছে তার পরিবার। তিনি আরও বলেন, নিজে বিয়ে করে আলাদা সংসার করায় বড় ভাইয়ের পরিবারের সদস্যদের খরচ দিতে পারেন না। তার মৃত ভাইয়ের ১৫ বছর বয়সি ছেলে অটোরিকশা চালিয়ে রোজগার শুরু করেছে। বিয়ের উপযুক্ত দুই মেয়েকে নিয়েও পরিবার খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছে।
তিনি জানান, আগুনে নিহত ভাইয়ের জন্য ঘটনার পরপরই অনেক আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পর আর কেউ খবর রাখেনি। বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর তিনিও জুতার ফ্যাক্টরির কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে চায়ের দোকান দিয়েছেন।
রনি আরও বলেন, যে ভবনে তিনি ও তার ভাই কাজ করতেন, সেই ভবনের দুই তলায় জুতার ফ্যাক্টরি, নিচতলায় কেমিক্যাল গুদাম। প্রতিটি মুহূর্তে সেখানে মৃত্যুর ঝুঁকি। এখন একইভাবে চলছে সবকিছু। আর কত লাশ পড়লে এমন অনিয়ম, ঝুঁকিপূর্ণ কাজ বন্ধ হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, পুরান ঢাকার বেশির ভাগ বাড়ির মালিক অতিরিক্ত ভাড়ার লোভে বাসার নিচতলায় রাসায়নিক পদার্থ মজুতের জন্য ভাড়া দেন। এই গুদামগুলোর বেশির ভাগেরই নেই পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসন, বিস্ফোরক অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর ছাড়পত্র।
তিনি বলেন, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা রাসায়নিক আমদানির অনুমোদন দিয়ে সেটা কোথায় রাখা হচ্ছে, কীভাবে রাখা হচ্ছে এর খোঁজ রাখে না। ব্যাপারটা এমন যে, অনুমোদন দিয়েই দায়িত্ব শেষ। কোনো সংস্থা আবার লাইসেন্স দেওয়া বন্ধ রাখলেও অবৈধ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে নেওয়া হয় না কোনো পদক্ষেপ। দেশে একটি ঘটনা ঘটার পরে মানুষ কিছুদিন সতর্ক থাকে। পরে আর এসব ঘটনাকে কিছু মনে করেন না। সতর্ক না হওয়ার কারণে আবারও বিস্ফোরণ বা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার শিকার হতে হয়। তাই ভবিষ্যতের বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পেতে অতি দ্রুত পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গুদাম সরানোর কোনো বিকল্প নেই।
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের কেমিক্যাল পল্লি প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তা, ড্রেন নির্মাণসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলছে। বিশাল এলাকা জুড়ে ধুধু প্রান্তর পড়ে রয়েছে। একটিও গোডাউন যায়নি সেখানে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষের পথে হলেও কাজ অনেটাই বাকি। প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া মেয়াদ আরও বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কেমিক্যাল অ্যান্ড মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম মিলন যুগান্তরকে জানান, মুন্সীগঞ্জে রাসায়নিক পার্ক স্থাপন কাজ এখনো শেষ হয়নি। কবে শেষ হবে তা দায়িত্বপ্রাপ্তরা সুর্দিষ্টভাবে বলতে পারছে না। এই সময়ে ব্যবসা পরিচালনা করতে তাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। কেননা, সরকারের নির্দেশনার কারণে সিটি করপোরেশন ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু বা নবায়ন করছে না।
তিনি বলেন, ট্রেড লাইসেন্স আপডেট বা ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া তো কোনো ব্যবসা পরিচালনা করা যায় না। এজন্য ব্যবসায়ীরা কেরানীগঞ্জ এবং সাভারে কেমিক্যাল গুদাম করে সেখান থেকে ট্রেড লাইসেন্স করছেন। অবশ্য সবার মূল ব্যবসা পুরান ঢাকাতেই রয়েছে। সরকারের উচিত মুন্সীগঞ্জে রাসায়নিক পল্লি স্থানান্তরের আগে পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদাম-কারখানাগুলোর ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করা।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উপ-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা শাহজাহান আলী যুগান্তরকে বলেন, পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গুদাম-কারখানাগুলো এখনো বিশৃঙ্খল অবস্থায় রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা মেনে সিটি করপোরেশন ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন বন্ধ রেখেছে। তবে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। এ কারণে ব্যবসায়ীরা সিটি করপোরেশনে এসে তাদের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ও ইস্যু করতে চাপাচাপি করেন। যদিও সিটি করপোরেশন নিজস্ব অবস্থানে অনড় রয়েছে।
তিনি জানান, নিমতলী ও চুড়িহাট্টার অগ্নিদুর্ঘটনার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে একটি তালিকা তৈরি করা হয়। সেসব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এরপর সেসবের আর কোনো অগ্রগতি নেই। পরিস্থিতি যাই হোক সিটি করপোরেশন সরকারের নির্দেশনা মেনে নিজস্ব অবস্থানে অনড় রয়েছে। বাকি কাজ সরকারের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও সংস্থাগুলোকে করতে হবে। তাহলে পুরান ঢাকাবাসীর অগ্নিদুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে।
সংশ্লিষ্টরা জানায়, পুরান ঢাকার প্রায় অর্ধকোটি মানুষ চরম অগ্নিঝুঁকিতে থাকলেও রাসায়নিক গুদাম-কারখানা স্থানান্তর কাজ খুঁড়িয়েই চলছে। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের বিসিক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপনের কাজের বিগত ৭ বছরের অগ্রগতি ৭০ শতাংশেরও কম। সেই সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়ন নানা জটিলতা মোকাবিলা করছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ‘বিসিক কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক, মুন্সীগঞ্জ’ শীর্ষক প্রকল্পের স্টিয়ারিং কমিটির (পিএসসি) বৈঠকে জানানো হয়, সময়মতো প্রাক্কলন অনুমোদন ও দরপত্র আহ্বান করতে না পারায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ধীরগতি বিরাজ করছে। বৈঠকে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা। খুব অল্প শ্রমিক নিয়ে কোনো রকমে চলছে মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম। এতে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে কিনা-তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণেই অনেকটা সময় চলে গেছে। ৩০৮ দশমিক ৩৩ একর জমির ওপর এ কেমিক্যাল পল্লি স্থাপন করা হচ্ছে। এখানে মোট ৬টি বিল্ডিং তৈরি করা হবে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, মুন্সীগঞ্জে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গুদাম-কারখানা স্থানান্তর কাজ চলছে। ইতোমধ্য প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ চলতি বছরে শেষ হবে না। এজন্য প্রকল্পের মেয়াদ আরও বাড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, পুরান ঢাকা থেকে কবে কেমিক্যাল গুদাম-কারখানা স্থানান্তর করা যাবে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
(এই প্রতিবেদন তৈরিতে সহযোগিতা করেছেন-যুগান্তরের পুরান ঢাকা প্রতিনিধি মোস্তাকিম আহমেদ এবং মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান প্রতিনিধি সুব্রত দাস রনক)