Image description

সাবেক স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নির্দেশেই গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শীর্ষ নেতাদের ওপর দফায় দফায় হামলা হয়েছে। দলটির ‘১৬ জুলাই: মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচি পণ্ড করতে বিভিন্ন স্থান থেকে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী দুদিন আগে আশপাশের এলাকা থেকে গোপালগঞ্জ শহরে হাজার হাজার নেতাকর্মী জড়ো করে আওয়ামী লীগ। টার্গেট ছিল এনসিপিকে ঢুকতে দেওয়া হলেও তাদের জীবিত বের হতে দেওয়া হবে না।

 

 

সরকারের গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণে কোনো সঠিক তথ্যই তারা সার্কুলেট করতে পারেনি প্রশাসনকে। আর প্রশাসনও ঘটনা ঘটার পূর্বে তেমন পূর্ব প্রস্তুতি না নিয়েই আমাদের সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স দেয়। ঘটনার পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যতটা তৎপর ছিল পূর্বে ততটা তৎপর থাকলে এমন ঘটনা নাও ঘটতে পারত। এই রক্তপিপাসু, সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না, পারবে না।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম

 

 

বিশেষ করে শীর্ষ নেতাদের হত্যা করা। এ মিশন সফল করতে স্বয়ং গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত থেকে মোবাইল ফোনে গোপালগঞ্জে একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলেন। এনসিপির বিরুদ্ধে জনগণকে উসকে দিতে বেশকিছু অডিও বার্তাও পাঠান। এছাড়া পুরো পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক সিনিয়র নেতা সমন্বয় করেন। এমনকি ভারতে পলাতক ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ছিলেন আরও এক ধাপ এগিয়ে। ফেসবুক লাইভে এসে তিনি সরাসরি হামলা চালানোর নির্দেশনা দেন।

 

যুগান্তরের হাতে আসা এমন একাধিক অডিও বার্তা নিয়ে প্রিন্ট ভার্সনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় শুক্রবার। মুহূর্তেই আলোচিত এই প্রতিবেদনটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। ‘হাসিনার নির্দেশেই হামলা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট শেয়ার করে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক এ নিয়ে একটি পোস্ট এনসিপির উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম। 

 

সারজিসের পোস্টটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো। 

‘আওয়ামী আমলের সুবিধাভোগী বুদ্ধি বেচা, ফুটেজখোর, টকশোবাজ ও ক্ষমতার দালালরা লাস্ট দুইদিনে অনেক কথা বলেছেন। এ রিপোর্টটা পড়ুন। এটা জাস্ট একটা রিপোর্ট। বাস্তবতার চেয়ে অনেক বেশি হিংস্র ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বহিঃপ্রকাশ ছিল। সেদিন দেশ ও দেশের বাইরের আওয়ামী সন্ত্রাসীরা গোপালগঞ্জে একত্রিত হয়ে যে সশস্ত্র জঙ্গি হামলা করেছিল সেটা নিয়ে কথা না বলে ভিকটিম ব্লেমিংয়ের মতো ছোটলোকি মন-মানসিকতার পরিচয় অনেকে দিয়েছেন।

স্বয়ং হাসিনা পুরো হামলা কো-অর্ডিনেট করেছিল। এলাকার লোকজনকে ক্ষেপিয়ে তুলে হামলা চালাতে মাজার ভাঙার গুজব ছড়িয়ে দেয় তারা। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে গুজব ছড়ায়। আমাদের গাড়ি বহরকে রাস্তার দুই পাশ থেকে আটকে দিয়ে গুলি বর্ষণ, ককটেল ও বোমা নিক্ষেপ করে। টার্গেট ছিল গণঅভ্যুত্থান ও এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্বের সবাইকে একযোগে মেরে ফেলা। শুটারও ভাড়া করে আনা হয়।

প্রথমে প্ল্যান করছিল- যেখানে আমাদের অধিকাংশ নেতাকর্মী ছিল সেই পুলিশ সুপারের কার্যালয়কে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার। পরবর্তীতে অপেক্ষা করছিল সন্ধ্যা হওয়ার, সেজন্যই কালক্ষেপণ করতে রাস্তায় গাছ কেটে, বাঁশ ফেলে অবরোধ করা হয়।

 

সরকারের গোয়েন্দা ব্যর্থতার কারণে কোনো সঠিক তথ্যই তারা সার্কুলেট করতে পারেনি প্রশাসনকে। আর প্রশাসনও ঘটনা ঘটার পূর্বে তেমন পূর্ব প্রস্তুতি না নিয়েই আমাদের সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স দেয়। ঘটনার পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যতটা তৎপর ছিল পূর্বে ততটা তৎপর থাকলে এমন ঘটনা নাও ঘটতে পারত। এই রক্তপিপাসু, সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না, পারবে না।’