Image description

গোপালগঞ্জের এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে দিনভর সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় গোপালগঞ্জে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। প্রশাসনের ডাকা ২২ ঘণ্টার কারফিউ চলছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ঘোষিত ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে সংঘর্ষে অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন নয়জন এবং আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পুরো জেলায় কারফিউ জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।

এর আগে, বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টা থেকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় কারফিউ জারি করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাস্তাঘাট ছিল প্রায় জনশূন্য। অফিসগামী কয়েকজন ছাড়া সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হননি। রাস্তায় পুলিশের উপস্থিতি না থাকলেও বিভিন্ন স্থানে আনসার সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানিয়েছেন, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ, র‌্যাব ও সেনা সদস্যদের পাশাপাশি চার প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে।

সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে বুধবার সকালে এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। সকাল ৯টার পর থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এনসিপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পদযাত্রা ও সমাবেশে বাধা দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালান।

সদর উপজেলার কংশুর এলাকায় পুলিশের গাড়ি, ইউএনওর বহর, পৌর পার্কের সমাবেশস্থল, জেলা প্রশাসকের বাসভবন এবং জেলা কারাগারের আশপাশে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।

দুপুর ২টার কিছু পর এনসিপির শীর্ষ নেতারা সমাবেশস্থলে পৌঁছান। সমাবেশ শেষে ফেরার পথে তাদের ওপর আবারও হামলা চালানো হয়। একপর্যায়ে তারা জেলা পুলিশের কার্যালয়ে আশ্রয় নেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান ব্যবহার করে এনসিপি নেতাদের গোপালগঞ্জ থেকে খুলনায় স্থানান্তর করা হয়।

এনসিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, হামলাকারীরা স্থানীয় কিছু মসজিদে ঢুকে মাইক ব্যবহার করে উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। দলটি প্রশাসন ও পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।

ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকার শাহবাগসহ রাজধানী ও বিভিন্ন জেলায় সড়ক অবরোধ করেছেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকাতেও বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দোষীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

এদিকে রাতের পরিস্থিতি বিবেচনায় গোপালগঞ্জে অতিরিক্ত দেড় হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র। তবে শহরের প্রবেশপথে গাছ ফেলে সড়ক অবরোধ করায় অনেক পুলিশ সদস্য সেখানে ঢুকতে পারেননি।

শীর্ষনিউজ