
সোমবার রাত ১০টার পর থেকেই টিএসসি, রাজু ভাস্কর্য, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রান্তে জড়ো হতে থাকেন শত শত শিক্ষার্থী। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।রাত ১২টার দিকে রোকেয়া, কুয়েত মৈত্রী, ফজিলাতুন্নেছা, বঙ্গমাতাসহ অন্যান্য ছাত্রী হল থেকে শত শত নারী শিক্ষার্থী থালাবাসন নিয়ে বেরিয়ে আসেন। সারা এলাকা জুড়ে প্রতিধ্বনিত হতে থাকে- “তুমি কে আমি কে? রাজাকার, রাজাকার! কে বলেছে কে বলেছে? স্বৈরাচার, স্বৈরাচার!”
প্রতিবাদের ভাষ্য হিসেবে নতুন মাত্রা পায় এই প্রতীকী স্লোগানগুলো। শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে আরও শোনা যায়- “লাখো শহীদের রক্তে কেনা, শেখ হাসিনার বাপের না!”, “আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম! দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ!”, “বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর!”, “আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না!”
এই স্লোগানগুলো যেন সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ, যা জন্ম নিয়েছিল ঠিক এক বছর আগে- ২০২৪ সালের ১৪ জুলাই। সেদিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বিতর্কিত মন্তব্য- “রাজাকারের নাতিপুতি চাকরি পাবে?”- ছাত্রসমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়। রাতারাতি ঢাবি পরিণত হয় প্রতিবাদের কেন্দ্রবিন্দুতে। সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে, যা পরবর্তীতে গণআন্দোলনের রূপ নিয়ে সরকারের পতনের পথ প্রশস্ত করে।
স্মরণ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া এক ছাত্রী বলেন, “এই দিনটা শুধুই ইতিহাস নয়, আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। এই স্লোগান আমাদের পরিচয়, প্রতিবাদের ভাষা।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারের উদযাপন ছিল শুধুমাত্র অতীত স্মরণ নয় বরং বর্তমানের অন্যায়-অনাচারের বিরুদ্ধে এক প্রতীকী উচ্চারণও। নারী শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণই এদিনের মূল উপজীব্য হয়ে ওঠে।