
কক্সবাজারের হিমছড়ি সৈকতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই শিক্ষার্থীর ১২ ঘণ্টায়ও খোঁজ মেলেনি। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত তাঁদের উদ্ধারে হিমছড়ি থেকে নাজিরারটেক সৈকত পর্যন্ত ২০-২২ কিলোমিটার উপকূলে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হয়।
নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের সন্ধানে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। তবে তল্লাশি অভিযানে অংশ নেওয়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সি-সেফ লাইফগার্ডের কর্মকর্তার ধারণা, ওই দুই শিক্ষার্থী গুপ্তখালে আটকা পড়েছেন।
জানা গেছে, সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের কাছে হিমছড়ি সৈকত এলাকায় সাগরে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হন চবির উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের তিন শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে কে এম সাদমান রহমান সাবাব (২১) নামের এক শিক্ষার্থীর মরদেহ সকাল সাড়ে ৯টা ভেসে আসে।
সাদমান ঢাকার মিরপুরের বাসিন্দা কে এম আনিছুর রহমানের ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মো. ফরহাদ হোসেন হলে থাকতেন তিনি। নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থী হলেন অরিত্র হাসান (২২) আসিফ আহমেদ (২২)। তাঁরা দুজনও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগ ও আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ছিলেন।
চবির তিন শিক্ষার্থীর সাগরে ডুবে যাওয়ার খবর পেয়ে সকাল ১০টা থেকে নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের তল্লাশি অভিযান শুরু করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সি-সেফ লাইফগার্ড, জেলা প্রশাসনের সৈকতকর্মী, ফায়ার সার্ভিস ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।
সি-সেফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার সাইফুল্লাহ সিফাত বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে কয়েক দিন ধরে সাগর বেশ উত্তাল রয়েছে। এ কারণে উদ্ধার অভিযানে বিঘ্ন ঘটছে। হিমছড়ি থেকে নাজিরারটেক সৈকত পর্যন্ত ২০-২২ কিলোমিটার উপকূলে কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো হয়। তবে নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর সন্ধান মেলেনি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আপেল মাহমুদ বলেন, লঘুচাপের কারণে সাগর বেশ উত্তাল। এ সময়ে পর্যটকদের গোসলে নামতে নিরুৎসাহিত করে সৈকতের বিভিন্ন স্থানে একাধিক লাল নিশানা ওড়ানো হয়েছে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনেকেই গোসলে নেমে বিপদে পড়ছেন।
সি-সেফের আঞ্চলিক পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, হিমছড়ি সৈকতে একাধিক গুপ্তখালের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সেখানে গোসল করা ঝুঁকিপূর্ণ। নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীও গুপ্তখালে আটকা পড়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক সাঈদ বিন কামাল চৌধুরী বলেন, গতকাল সোমবার রাতে প্রথম বর্ষের চারজন, অন্য বর্ষের একজনসহ মোট পাঁচজন শিক্ষার্থী কক্সবাজারে ঘুরতে যান। তাঁরা নিজ উদ্যোগে সেখানে গিয়েছেন। এর মধ্যে সাগরে ভেসে গিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। দুজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে। নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের পরিবারও কক্সবাজার পৌঁছেছে।