
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত শিক্ষক ও হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ড. কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদন্নোতিতে শুক্রবার বিকেল ৩টায় বোর্ড বসার কথা ছিল। এই দিনই আমার দেশ পত্রিকায় ‘হত্যাচেষ্টা আসামীর পদোন্নতিতে চবিতে বোর্ড বসছে আজ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে। এরপরই শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। আন্দোলনের মুখে বোর্ড প্রত্যাহার করে কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটা থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে সাড়ে ৩টায় প্রশাসনিক ভবনে তালাদেন তারা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দু’উপ-উপাচার্য ও কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ সময়ে তাদেরকে ‘বাহ! ভিসি চমৎকার, স্বৈরাচারের পাহারাদার’; ‘একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর' ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
জানা যায়, গতবছর ২৬ নভেম্বর হেফাজতে ইসলামের কর্মী এনামুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীদের হামলার শিকার হন। এ সময়ে তিনি কিরিচের কোপে মাথায় গুরুতর জখম হন এবং তার ডান হাত ভেঙে যায়। এ ঘটনায় তিনি গত ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু বকর সিদ্দিকের আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নামে মামলার আবেদন করেন। এই মামলার ২০ নম্বর আসামী চবির সংস্কৃত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কুশল বরণ চক্রবর্তী।
এ ছাড়া গতবছর ২৬ অক্টোবর 'বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর উপর গণহত্যা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়েন কুশল বরণ চক্রবর্তী। ভারতের প্রেসক্রিপশনে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে তার গ্রেপ্তারেও দাবি জানান তারা। তাকে ভারতীয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সমর্থক ও র-এর এজেন্ট বলে অভিযোগ করা হয়।
কুশল বরণ চক্রবর্তী বোর্ডের বিষয়ে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, কুশল বরণের বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে। সংবাদ পত্রে ওর বিষয়ে কিছু সংবেদনশীল নিউজ হয়েছে। এজন্য বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে।
আন্দোলন শেষে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইসহাক ভূইয়া বলেন, হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি কুশল বরণ চক্রবর্তীর পদোন্নতি আজ বোর্ড বসানো হয়েছে। এজন্য আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। তার বোর্ড প্রত্যাহার করা হয়েছে। কুশল বরণ, রন্টু দাসসহ যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিল তাদেরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হল।