
আগামী পয়লা জুলাই থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ন্যূনতম বিশেষ সুবিধা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীদের জন্য ৭৫০ টাকা করা হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের জন্য এ বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের বাজেট ঘোষণার পরদিন; অর্থাৎ ৩ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ এ বিষয়ে যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল, তাতে সংশোধনী আনা হয়েছে। এ বিষয়ে শিগগিরই আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গতকাল রবিবার বিকেলে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এর আগে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদারও সরকারি কর্মচারীদের ন্যূনতম বিশেষ ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের কথা জানান।
অর্থসচিব জানান, চাকরিরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১ হাজার টাকা ও পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৫০০ টাকা বিশেষ সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এটা বেড়ে এখন চাকরিরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে হবে ন্যূনতম ১ হাজার ৫০০ টাকা আর পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে হবে ন্যূনতম ৭৫০ টাকা।
এ ছাড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যাদের নিট পেনশন ১৭ হাজার ৩৮৮ টাকা বা তার বেশি, তারা পেনশনের ১০ শতাংশ বিশেষ ভাতা হিসেবে পাবেন। আর যাদের নিট পেনশন এ পরিমাণের কম, তারা পাবেন ১৫ শতাংশ বিশেষ ভাতা। এতে আরও জানানো হয়, বিশেষ ভাতা বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনী, বিচার বিভাগ এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য আলাদা আদেশ জারি করবে সরকার।
বাজেট পেশের আগে কমিটি গঠন করে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার বিষয়ে কাজ হয়েছিল। কিন্তু মহার্ঘ ভাতা দেওয়া থেকে সরে এসে পরে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য পেশ করা বাজেট বক্তব্যে উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, ‘২০১৫ সালের পর বেতনকাঠামো না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।’
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মূল বেতনের ১৫ শতাংশ বাড়ানো হলে ১১তম গ্রেডের ৮৭৫ টাকা, ১২তম গ্রেডের ৬৯৫ টাকা, ১৩তম গ্রেডের ৬৫০ টাকা, ১৪তম গ্রেডের ৫৩০ টাকা, ১৫তম গ্রেডের ৪৫৫ টাকা, ১৬তম গ্রেডের ৩৯৫ টাকা, ১৭তম গ্রেডের ৩৫০ টাকা, ১৮তম গ্রেডের ৩২০ টাকা, ১৯তম গ্রেডের ২৭৫ টাকা ও ২০তম গ্রেডের ২৩৭ টাকা বেতন বাড়ে। এসব কর্মচারীদের বেতন একেবারে কম হওয়ায় এটি সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা করা হয়। তবে গতকাল বাজেট অনুমোদনের সময় এটি আরও বাড়িয়ে দেড় হাজার টাকা করা হয়েছে।
সাধারণত পাঁচ বছর অন্তর একটি নতুন বেতন স্কেল ঘোষণা করার কথা। সর্বশেষ ২০১৫ সালের জুলাই মাসে অষ্টম স্কেল কার্যকর হয়। এরপর আর কোনো বেতন স্কেলও হয়নি। মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় সরকারি চাকরিজীবীরা প্রতিবছর ৫ শতাংশ হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট পেয়ে আসছিলেন। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের পাশাপাশি অতিরিক্ত ৫ শতাংশ হারে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয়, যা অব্যাহত রয়েছে। মহার্ঘ ভাতা বা বিশেষ সুবিধা কার্যকরের সঙ্গে ৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে।