Image description
ব্যান্ডউইথ ক্যাপিংও করবে বিটিআরসি

চোরাই পথে এনে ব্যান্ডউইথ ব্যবহার এবং নানা অনিয়মের সঙ্গে দুটি আইআইজি (আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে) কোম্পানির জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে বিটিআরসি। গুরুতর অনিয়ম পাওয়ায় কোম্পানি দুটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শাস্তির অংশ হিসেবে লেভেল-থ্রি ক্যারিয়ার এবং আর্থ কমিউনিকেশন নামে দুটি আইআইজি কোম্পানিকে ২২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। শুধু আর্থিক জরিমানা নয়, বেআইনি কাজে জড়িত থাকার কারণে কোম্পানি দুটির ব্যান্ডউইথ ক্যাপিংও করবে বিটিআরসি।

জানা গেছে, গত ১৯ মে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, লেভেল-থ্রি ক্যারিয়ারকে ১০ কোটি টাকা এবং আর্থ কমিউনিকেশনকে ১২ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের জুলাই থেকে কোম্পানি দুটির ২৫ শতাংশ ব্যান্ডউইথ ক্যাপিং করা হবে।

বিটিআরসির কমিশন সভা সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ অবকাঠামো শেয়ারিং ও চুক্তি লঙ্ঘন, অনুমোদনহীন আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথ সংগ্রহ, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ে নীতিমালার লঙ্ঘন, অনুমোদনহীন আন্তর্জাতিক ব্যান্ডউইথ সংগ্রহ, এনটিটিএন গাইডলাইন লঙ্ঘন, অনুমোদনহীনভাবে ওভারহেড অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক স্থাপন এবং ব্যান্ডউইথের প্রকৃত মূল্য ও ভুল তথ্যসহ আইআইজি কোম্পানি দুটির বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে। আইটিসিগুলোর বেনাপোলের টেরিস্ট্রিয়াল কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের অপারেশনাল স্থাপনা পরিদর্শনে এসব প্রমাণ পেয়েছে বিটিআরসি।

এর আগে গত ৩০ এপ্রিল দৈনিক কালবেলায় ‘ব্যান্ডউইথও আসছে চোরাই পথে!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধভাবে ব্যান্ডউইথ আনছে একটি সংগঠিত চক্র, যার নেতৃত্বে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কয়েকটি আইটিসি ও আইআইজি অপারেটর। সরকারের অনুমতি ছাড়াই বিটিআরসির দুর্বল নজরদারির সুযোগে গড়ে উঠেছে এই চোরাচালান নেটওয়ার্ক। বছরে শত শত কোটি টাকার অবৈধ বাণিজ্য হলেও সরকার পাচ্ছে না কোনো রাজস্ব।

ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সরকারের পক্ষ থেকে গত ৪ মে চোরাই পথে আসা ব্যান্ডউইথ ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ দেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। ওই নির্দেশে ৫ দিনের মধ্যে অবৈধ ব্যান্ডউইথ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিটিআরসিকে বলা হয়। এসব অবৈধ ব্যবসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রয়োজনে গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইআইজি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি আবদুল হাকিম কালবেলাকে বলেন, অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে জরিমানার সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক আছে। তবে কোম্পানিগুলো কেন এ ধরনের অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে, সেগুলোও বের করতে হবে। কারণ অনেকে বাধ্য হয়েও অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। বিটিআরসির রেভিনিউ শেয়ারসহ অন্যান্য অনেক বৈষম্য রয়েছে, এগুলোর সংশোধন করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।