Image description

সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, যে জঞ্জাল গত ৫৪ বছরে জমেছে, আমাদের এই অল্প দিনে তা দূর করা সম্ভব না। তবে আমরা অনেক কাজ করছি। একটা ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করছি, যে আগামী ৫ বছরে কী করা উচিত, ১০ বছরে কী করা উচিত। আমরা যাবার আগে একটা প্রেস কনফারেন্স করব ‘রোড টু সাকসেসর’। 

তিনি বলেন, আমাদের পরবর্তী পর্যায়ে যারা নির্বাচিত হয়ে আসবে, আমার উপলব্ধি আমি নোট আকারে দিয়ে যাব। উনি যদি ফিল করেন এখান থেকে উনার নেওয়ার মতো কিছু আছে, তাহলে উনি নিবেন এবং আশা করি দেশের কাজে লাগাবেন।

সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলন সংস্কৃতি উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। এ সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, জব্বারের বলী খেলা ও সাম্পান বাইচের আয়োজকরা উপস্থিত ছিলেন।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, এখন বললেই বলা হবে, গত ১৫ বছরের কথা বলা হচ্ছে। এতদিন আমরা শুধুমাত্র পাসের হার বাড়িয়েছি, আমরা শুধু দেখেছি কতজন জিপিএ-৫ পায়। যখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলি, টের পাই, আমাদের শিক্ষা এবং সংস্কৃতির ফাউন্ডেশন ভয়াবহভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। এটা ঠিক করার জন্য সময় লাগবে। কাজ শুরু করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে কয়েকবার আলোচনা করেছি। তাদের সঙ্গে ‘নতুন কুড়ি’ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এক সময় নতুন কুড়ি ক্রেজ তৈরি করেছিল। এটা চালু হলে একটা প্রভাব পড়বে। আর স্কুলের কারিকুলাম একটা মেজর জিনিস। আমরা তো অল্প কদিনের সরকার। নির্বাচিত সরকার আসলে শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে টোটালি তাকানোর সময় আসবে। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাটার কাজ কী এবং আমরা ইউনিভার্সিটি থেকে কী প্রডিউস করতে চাই, এটা মাথায় রেখে পুরো ব্যবস্থা নতুন ডিজাইন করার সময় চলে এসেছে।

চট্টগ্রামে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর নিয়ে পরিকল্পনা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, জিয়া স্মৃতি জাদুঘর আমরা পরিদর্শন করেছি। এটা গত ১৫ থেকে ১৬ বছর অলমোস্ট ইনঅ্যাক্টিভ ছিল। এটা আমার মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটা প্রতিষ্ঠান। ফলে এটা আমার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। এ জন্য মাস তিনেক আগে আমরা মন্ত্রণালয়ে একটা সভা করেছি এটা নিয়ে। সেই মিটিংয়ে প্রথম কাজটা আমরা করেছি যে, এটার যে বরাদ্দ ছিল সেটা আমরা দ্বিগুণ করেছি। এবার এখানে এসে জিয়া স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শনের পর আমরা যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি, শুধু বরাদ্দ বাড়ানোটাই গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে এটাকে একটা পূর্ণাঙ্গ মিউজিয়ামে রূপান্তর করা।

উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, আপনারা দেখতে পেয়েছেন এবারের নববর্ষ স্বাধীনতার পরে সবচেয়ে বড় এবং ইনক্লুসিভ উৎসব হয়েছে। মূল কাজ সংস্কৃতিটা যেন বাংলাদেশের সবার সংস্কৃতি হয়ে উঠে। এর একটা বড় দিক হচ্ছে উৎসব। উৎসব একটা জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক এক্সপ্রেশন হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ। 

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে একটা বড় উৎসব জব্বারের বলী খেলা। চট্টগ্রামের নাম বললেই এই ছবিটা ভাসে। আরেকটা হলো, সাম্পান বাইচ। গত ১৯ বছর ধরে চলছে। চট্টগ্রাম কল্পনা করা খুব কঠিন সাম্পান ছাড়া। জব্বারের বলী খেলা যারা আয়োজন করেন তাদের সঙ্গে রোববার রাতে সভা হয়েছে। আগামী বছর থেকে এই আয়োজনের সঙ্গে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ও যুক্ত হবে। বাংলাদেশের কালচারাল হেরিটেজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ক্যালেন্ডারে যুক্ত হবে। সাম্পান বাইচের সঙ্গেও আমরা যুক্ত হব।

এর আগে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি, মুসলিম ইনস্টিটিউট, জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর ও জিয়া স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন।